‘বর্ধিত’ হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই নগরবাসীর। এর মধ্যে আবার নতুন করে ‘হোল্ডিং নম্বর প্লেট’ স্থাপনের জন্য নতুন করে আলাদা ফি প্রদান করতে হবে ভবন মালিকদের। প্রতিটি নম্বর প্লেটের জন্য করদাতাদের গুণতে হবে ৩৫০ টাকা করে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) পাবে ৩৫ টাকা। বাকি ৩১৫ টাকা পাবে ‘ওয়াসি এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। গত মাসে বিনা দরপত্রে ওই প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিয়েছে চসিক।
এ বিষয়ে চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা কাজও শুরু করেছে। প্রতিটি হোল্ডিং থেকে তারা ৩৫০ টাকা আদায় করবে। এর মধ্যে সিটি কর্পোরেশন ১০ শতাংশ কমিশন পাবে। এ কর্মকর্তা বলেন, হোল্ডিং নম্বর নেয়ার জন্য কাউকে বাধ্য করতে পারবে না। এ বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা দেয়া আছে। বাধ্য করেছে এমন অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। এদিকে নম্বর প্লেট এর নামে ফি আদায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন করদাতারা। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম করদাতা সুরক্ষা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আমির উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, এমনিতে করের বোঝা নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ আছে। সেখানে আবার হোল্ডিং নম্বর প্লেট স্থাপনের নামে অর্থ আদায় করে নগরবাসীর খরচের বোঝা বাড়িয়ে দিচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়ার মতো না। এটা এক ধরনের কর্পোরেশনের স্বেচ্ছাচারিতা। যদিও তারা বলছে বাধ্য করবে না। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে তো সেভাবে মনিটরিং করা হয় না। চসিক সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী ‘ওয়াসি এন্টারপ্রাইজ’ ২২টি ওয়ার্ডে ডিজিটাল
হোল্ডিং নম্বর প্লেট স্থাপন করবে। ওয়ার্ডগুলো হচ্ছে- ২নং জালালাবাদ, ৩নং পাঁচলাইশ, ৫নং মোহরা, ৭নং পশ্চিম ষোলশহর, উত্তর কাট্টলী, ১২নং সরাইপাড়া, ১৪নং লালখান বাজার, ১৫নং বাগমনিরাম, ১৬নং চকবাজার, ১৭নং পশ্চিম বাকলিয়া, ১৮নং পূর্ব বাকলিয়া, ১৯নং দক্ষিণ বাকলিয়া, ২০নং দেওয়ান বাজার, ২১নং জামালখান, ২২নং এনায়েত বাজার, ২৩নং উত্তর পাঠানটুলী, ৩০নং পূর্ব মাদারবাড়ী, ৩১নং আলকরণ, ৩২নং আন্দরকিল্লা, ৩৩নং ফিরিঙ্গী বাজার, ৩৫নং বক্সিরহাট এবং ৩৬নং গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড।
এর আগে ৪ নম্বর চান্দগাঁও এবং ৮নং শুলকবহর ওয়ার্ডের জন্য ওয়াসি এন্টারপ্রাইজকে অনুমতি দিয়েছিল চসিক। তখন প্রতি হোল্ডিং নম্বর প্লেটের টাকা ফি ধার্য্য করা হয়েছিল ৩০০ টাকা। যার পুরোটাই পাবে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে ২২টি ওয়ার্ডের জন্য সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী, নিজ খরচে হোল্ডিং মালিকগণের জ্ঞাতার্থে ডিজিটাল হোল্ডিং নম্বর প্লেট সংক্রান্ত পত্রিকা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ওয়াসি এন্টারপ্রাইজ। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি ডিজিটাল হোল্ডিং নম্বর প্লেট তৈরি অথবা স্থাপন হোল্ডিং মালিক হতে আলাপ আলোচনাক্রমে আদায় করবে। যত সংখ্যক হোল্ডিং নম্বর প্লেট স্থাপন হবে তার ফি প্রতি মাসে তালিকাসহ ১-১০ তারিখের মধ্যে সিটি কর্পোরেশন এর রাজস্ব বিভাগে জমা করতে হবে। ২০২৫ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তি কার্যকর থাকবে।