অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, দেশের মানুষ বার বার আশাহত হয়েছে। তারা যেন আর আশাহত না হয়। কারণ এবার তারা হোঁচট খেলে আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, জুলাই–আগস্টের গণহত্যার বিচার এবং রাষ্ট্রের সংস্কার কাজ এগিয়ে চলছে। আর আমরা যে সময় পাব তার মধ্যে যেন এই কাজগুলোকে এগিয়ে নিতে পারি।
মাহফুজ আলম গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ (পিআইবি) মিলনায়তনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত তারুণ্যের উৎসব–২০২৫ উপলক্ষে প্রামাণ্য চিত্র ও চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মাহবুবা ফারজানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও শহীদ শাকিলের মা বিবি আয়েশা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ। খবর বাসসের।
মাহফুজ আলম বলেন, এক দল, এক দেশ, এক নেতা, এক রাষ্ট্র– এই নীতি ধরে শেখ হাসিনা তার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে গিয়ে যে ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি তা দূর করেছেন। তিনি বলেন, তিনি তার পিতার প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন। ১৯৭২ থেকে ’৭৫ পর্যন্ত বিরোধীদলের ওপর নির্যাতন–নিপীড়নের মতো তিনিও একই পথ বেছে নিয়েছিলেন। শেখ মুজিব মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছেন। দেশের এক দশকের ইতিহাস মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার ইতিহাস। শেখ মুজিবের আমলে গুম, হত্যা ও নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। মাহফুজ বলেন, শেখ হাসিনা তরুণদের বন্দী করে রেখেছিলেন একটি মতাদর্শের মধ্যে। তিনি যাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন, তারাই তার ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে।
তিনি বলেন, তরুণদের ক্ষোভ–ঘৃণাকে ইতিবাচক দিকে পরিচালিত করতে হবে। অবশিষ্ট ফ্যাসিবাদ দূর করতে হবে। জুলাই–আগস্টের অভ্যূত্থানকে সামগ্রিক বিপ্লবে রূপান্তর করতে হবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যে মানসিকতা তৈরি করেছেন, সে দূষণে তরুণ সমাজও যুক্ত হয়েছে। সেখান থেকে তরুণ সমাজকে মুক্ত করতে হবে, দেশের ১৮ কোটি মানুষকে মুক্ত করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থানে আমরা যা পারিনি, তরুণরা তা পেরেছে। বর্তমানে আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে তরুণদের আরও উজ্জীবিত করা। কারণ তরুণরাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা যেন আবার বাংলাদেশকে উজ্জীবিত করতে পারে। তারুণ্যর উৎসব–২০২৫ এর লক্ষ্যও সেটাই। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার মতো ভয়ংকর স্বৈরশাসককে আমরা মোকাবেলা করতে পারিনি। আমাদের তরুণরা পেরেছে। তারাই আগামীর বাংলাদেশকে নির্মাণ করবে। আর এতে আমরা সকলেই একীভূত থাকবো।