ভারতে বন্যা ও বুকিং দর বৃদ্ধির অজুহাতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। গত দুইদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাক্তাই খাতুনগঞ্জের বাজারে বর্তমানে ব্যবসায়ীদের দোকান গুদামে সব ভারতীয় পেঁয়াজ। কিন্তু গত ক’দিন ধরে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। ভারতের নাসিক রাজ্যে বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে ভারতের অভ্যন্তরে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা রপ্তানিমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাই বাজারে প্রভাব পড়েছে। গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫০–৫২ টাকায়। গত দুইদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৪০–৪১ টাকায়।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি–১ (তাহেরপুরী), বারি–২ (রবি মৌসুম), বারি–৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারের ওপর খুব বড় প্রভাব ফেলে। চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আহসান খালেদ পারভেজ দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভারতের বন্যা ও পেঁয়াজের বুকিং দর বাড়ার কারণে দাম বাড়ছে। গত ক’দিনে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। আমাদের দেশে ৯০ শতাংশ এখন ভারতীয় পেঁয়াজ। ভারত থেকে পেঁয়াজের বড় সরবরাহ আসে নাসিক থেকে। শুনেছি সেখানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা হয়েছে। তাই সেখানে পেঁয়াজের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
চাক্তাই আফরা ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, পেঁয়াজের বাজার গত কিছুদিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী। চাহিদার তুলনায় বাজারে সরবরাহ কম। তাই দাম বেড়েছে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করে। তারা এক সময় একেক অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করে থাকেন। এখন ব্যবসায়ীরা বলছেন– ভারতে বন্যা হয়েছে তাই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এখন আমাদের কথা হচ্ছে, বাজারে বর্তমানে যেসব পেঁয়াজ আছে, সেগুলো তো দুই সপ্তাহ আগে আমদানি করা। এখন ভারতের বন্যার অজুহাত দেখিয়ে আবারো ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের পকেট কাটছে। প্রশাসনের উচিত পেঁয়াজের ক্রয় মূল্য ও বিক্রয়মূল্য যাচাই করে অভিযান পরিচালনা করা। না হলে ব্যবসায়ীরা আবারও পেঁয়াজের বাজার অস্থির করে তুলবেন।