এবার দক্ষিণ চট্টগ্রামে ঈদযাত্রা কেমন হবে

নতুন ব্রিজ থেকে সাতকানিয়া সড়কের প্রশস্ততা ৩৪ ফুটে উন্নীত চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার লাইনে লোকাল ট্রেন চালুর উদ্যোগ

মুহাম্মদ এরশাদ, চন্দনাইশ | বুধবার , ৩ এপ্রিল, ২০২৪ at ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

প্রতিবছর ঈদুল ফিতরের ছুটিতে লাখ লাখ মানুষ গ্রামে ফিরেন। অল্প সময়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ ঘরমুখো হওয়ায় সড়কে ভোগান্তির অন্ত থাকে না। এবার ভোগান্তিমুক্ত ঈদযাত্রা হবে দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসীর এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। মাত্র ২৩ বছর আগেও দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের ঈদযাত্রার প্রধান ভোগান্তির নাম ছিল চট্টগ্রামকক্সবাজার জাতীয় মহাসড়ক। তখন মহাসড়কটির কোথাও ১৮ ফুট আবার কোথাও ২০ ফুট প্রশস্ত ছিল। সড়কটি যেমন সরু ছিল তেমনি ছিল খানাখন্দে ভরা। এছাড়া বিভিন্ন বাজার পয়েন্টে দীর্ঘক্ষণ যানজট লেগে থাকতো। কিন্তু বর্তমানে সে দৃশ্য অনেকটা বদলে গেছে। কর্ণফুলী শাহ আমানত (নতুন ব্রিজ) থেকে সাতকানিয়ার মৌলভীর দোকান পর্যন্ত চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক বিভাগের অধীন প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়ক পূর্বের ১৮২০ ফুট থেকে ৩৪ ফুটে উন্নীত করা হয়েছে। আগের সেই খানাখন্দে ভরা ও চিরচেনা যানজটও এখন আর চোখে পড়ে না। সড়কের প্রশস্ততা বাড়ার কারণে যানজটমুক্ত হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলো হয়েছে অনেকটা সরলীকরণ। মহাসড়ক প্রশস্ত ও যানজটমুক্ত হওয়ায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, পটিয়ার যাত্রীদের স্বস্তি ফিরেছে।

পাশাপাশি এবার ঈদে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও চট্টগ্রামদোহাজারীকঙবাজার লাইনে লোকাল ট্রেন চালু ও বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রী উঠা নামার সিন্ধান্ত নেয়ায় যাত্রী পরিবহনে কিছুটা চাপ কমবে মহাসড়কে।

চন্দনাইশের দোহাজারী, বাগিচাহাট, গাছবাড়িয়া কলেজ গেট, খানহাট, বাদামতল ও পটিয়া উপজেলার শান্তিরহাটসহ কয়েকটি স্থানে সামান্য যানজট হলেও সড়কের প্রশস্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় পুরো সড়কের কোথাও গাড়ি চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয় না চালকদের। ফলে পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়াসহ চট্টগ্রাম দক্ষিণের মানুষের জন্য এবারের ঈদযাত্রায় তেমন ভোগান্তি পোহাতে হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নগরীর নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী সাতকানিয়ার ছোট ঢেমশা এলাকার নুরুল আবছার জানান, সরু ও যানজটের চিরচেনা সেই দৃশ্য এখন আর নেই চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়কে। ফলে ভোগান্তি ছাড়াই বাড়ি ফিরতে পারছি। তিনি জানান, মাত্র ২ বছর আগেও নতুন ব্রিজ থেকে সাতকানিয়ার কেরানীহাট আসতেই সময় লাগতো দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। এখন সড়কের প্রশস্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় কোথাও যানজটে পড়তে হয় না, এক ঘণ্টার মধ্যেই কেরানীহাট আসাযাওয়া করা যাচ্ছে।

বাস চালক সাতকানিয়ার কালিয়াইশ গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, এক সময় পটিয়া, চন্দনাইশ অংশ পার হতেই কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতো। এখন মহাসড়ক প্রশস্ত হওয়ার কারণে এই অংশটি পার হতে তেমন সময় লাগে না। তবে বিভিন্ন বাজার অংশে ফুটপাত দখল করে ভাসমান দোকান বসা, সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা দাঁড়িয়ে থাকা, যাত্রী পরিবহনকারী লোকাল বাস ও লেগুনা যত্রতত্র থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করার কারণে কিছুটা যানজট ও ভোগান্তি পোহাতে হয়।

সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ রাফিজ বিন মনজুর জানান, সংকীর্ণ সড়কের কারণে মহাসড়কে যানজট হতো। পূর্বের ১৮ ফুটের সড়ক এখন ৩৪ ফুট প্রশস্তে উন্নীত করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকগুলোও সরলীকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে সড়ক বড় হওয়াতে এবার ঈদ যাত্রায় কোনো ধরনের ভোগান্তির সুযোগ নেই। চালকরা যদি ঠিকমতো গাড়ি চালায় এবং ফুটপাত যদি না বসে তাহলে বর্তমানে সড়কের যে অবস্থা তাতে কখনোই যানজট হবে না এবং ঈদযাত্রা হবে খুবই স্বস্তিদায়ক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগর্তের পানিতে ডুবে একই পরিবারের দুই শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধকাপ্তাই বিদ্যুৎ ভবনে বন্য হাতির দল