যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের শর্তে এবার কন্টেনার স্ক্যানার মেশিন কিনছে চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরে আমদানি–রপ্তানি পণ্য স্ক্যানিংয়ের দায়িত্ব পুরোপুরি চট্টগ্রাম কাস্টমসের হলেও আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বন্দর কর্তৃপক্ষ দুটি স্ক্যানার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ স্ক্যানার কেনার জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বিশ্বের নানা দেশে পণ্য রপ্তানি হয়। বিশেষ করে ইউরোপ ও আমেরিকায় পাঠানো হয় তৈরি পোশাকসহ নানা পণ্য। পর্যাপ্ত স্ক্যানারের অভাবে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে প্রতিদিন শত শত কন্টেনার কোনো ধরনের স্ক্যানিং ছাড়াই জাহাজিকরণ করা হয়, যা বিদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের একাধিক টিম বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করে স্ক্যানার স্থাপনে তাগাদা দিয়েছে। বিশেষ করে ইন্টারন্যাশনাল শিপিং অ্যান্ড পোর্ট সিকিউরিটি সিস্টেম বা আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নের অন্যতম শর্ত হচ্ছে পণ্য স্ক্যানিং করে জাহাজিকরণ করা। এতে করে সংশ্লিষ্ট দেশে কোনো ধরনের ক্ষতিকর পণ্য রপ্তানি হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়।
আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে স্ক্যানার স্থাপনের জন্য দফায় দফায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে বেশি দূর অগ্রসর না হওয়ায় অবশেষে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজেরাই দুটি স্ক্যানার স্থাপন করছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে স্ক্যানার দুটি কেনার অর্থের যোগান দেবে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দেশি–বিদেশি দশটি প্রতিষ্ঠান টেন্ডার ক্রয় করেছে। সব দিক যাছাই–বাছাই করে বন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বাধুনিক মানের দুটি স্ক্যানার স্থাপন করবে বলে সংশ্লিষ্ট জানিয়েছেন।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে ৭টি স্ক্যানার রয়েছে। এর মধ্যে বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থের (জিসিবি) ১ নম্বর গেট এবং নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল (এনসিটি) ৩ নম্বর গেটে দুটি ফিঙড কন্টেনার স্ক্যানার রয়েছে। এছাড়া চিটাগাং কন্টেনার টার্মিনালের (সিসিটি) ২, ৪ ও ৫ নম্বর গেটে রয়েছে তিনটি ফিঙড কন্টেনার স্ক্যানার। সিসিটি–২ ও জিসিবি–২ নম্বর গেটে দুটি মোবাইল স্ক্যানার রয়েছে। মোট ১২টি গেটের মধ্যে ৭টিতে স্ক্যানার রয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন দুটি স্ক্যানার কিনলে এগুলো এনসিটির দুটি গেটে স্থাপন করা হতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, স্ক্যানার স্থাপনের ব্যাপারটি জরুরি হয়ে উঠেছে। আইএসপিএস কোড বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম বন্দর আন্তরিক। বৈদেশিক বাণিজ্যের স্বার্থেই এই কোড অনুসরণ করতে হবে।