প্রথম ম্যাচে একেবারেই নিস্প্রভ ছিলেন পাকিস্তানী ওপেনার উসমান খান। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে এসে ঝলক দেখালেন। আর সে ঝলকটা এতটাই আলোকময় ছিল যে, একেবারে জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল দুর্বার রাজশাহী। এবারের বিপিএলে প্রথম সেঞ্চুরি এলো এই পাকিস্তানীর ব্যাট থেকে। সোহাগ গাজীর বল ছক্কায় উড়িয়ে নব্বই পেরোলেন উসমান খান। দ্রুত তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আশায়ই হয়তো পরের বল আবারও বড় শটের চেষ্টা করলেন তিনি। কিন্তু টাইমিং হলো না ঠিকঠাক, ক্যাচ উঠে গেল ফাইন লেগে। পেছনে দৌড়ে নাগাল পেলেও বল হাতে রাখতে পারলেন না শফিউল ইসলাম। সীমানা থেকে ছুটে আসা সাব্বির রহমানও তখন ভূপাতিত। উসমান জীবন পেয়ে গেলেন ৯৫ রানে। এরপর আর ভুল করেননি চিটাগং কিংসের ব্যাটসম্যান। পরের দুই বল দেখেশুনে খেলে চলতি বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি উপহার দিলেন তিনি। এরপর আরও কিছু দূর এগিয়ে ক্যারিয়ার সেরা ১২৩ রান করে থামলেন পাকিস্তানি এই ক্রিকেটার। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল শুক্রবার কুয়াশাচ্ছন্ন দিনে চার–ছক্কার উত্তাপ ছড়ান উসমান। দুর্বার রাজশাহীর বাজে বোলিংয়ের উপযুক্ত সাজা দিয়ে ১৩ চারের সঙ্গে ৬টি ছক্কায় তিনি সাজান ৬২ বলের ইনিংস। তাসকিন আহমেদ ছাড়া রাজশাহীর আর কোনো বোলার তেমন কোনো পরীক্ষায়ই ফেলতে পারেননি উসমানকে। প্রতি ওভারেই শর্ট বল, হাফ ভলিসহ আলগা ডেলিভারি পেয়ে পূর্ণ ফায়দা নেন ২৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপিএলে প্রথমবার খেলতে এসে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন উসমান। এক আসর পর এবার চট্টগ্রামের আরেক ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়েও দ্বিতীয় ম্যাচেই তিনি পেলেন তিন অঙ্কের জাদুকরী ছোঁয়া। বিপিএলে একাধিক সেঞ্চুরি করা ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান তিনি। মাত্র ১৩ ইনিংসে দুটি সেঞ্চুরি হয়ে গেল তার। আগের পাঁচজনই খেলেছেন ত্রিশের বেশি ইনিংস। ৫২ ইনিংসে ৫ সেঞ্চুরি নিয়ে সবার ওপরে ক্রিস গেইল। এছাড়া একাধিক সেঞ্চুরি করেছেন জনসন চার্লস, আন্দ্রে ফ্লেচার, এভিন লুইস ও তামিম ইকবাল। মাত্র ২১ বলে হাফ সেঞ্চুরি পুরন করেন উসমান। পরের পঞ্চাশ করতে লাগে আরও ২৭ বল। নবম ওভারে রায়ান বার্লের বলে ছক্কার পর মারেন দুটি চার। মুরাদের পরপর দুই ওভারে ওড়ান একটি করে ছক্কা। এরপর সেই জীবন পাওয়ার ঘটনা। ক্যাচ মিসের পাশাপাশি শফিউলের সঙ্গে ধাক্কা লাগে ডিপ স্কয়ার লেগ থেকে দৌড়ে আসা সাব্বির হোসেনের। মাথা ও ঘাড়ে আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়ে যেতে হয় সাব্বিরকে। ১৪তম ওভারে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেললেও এরপর আর বেশি দূর যাওয়া হয়নি উসমানের। মাত্র দুটি চার ও একটি ছক্কা মারতে পারেন তিনি। ১৯তম ওভারে তাসকিনের বলে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কিংস ওপেনার। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার পঞ্চম সেঞ্চুরি এটি। পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে আর শুধু বাবর আজমের । তিনি করেন ১১টি সেঞ্চুরি।