এবাদত ও এখলাসের জৌলুশ সালানা ওরছে হযরত গাউছুল আজম (রা.)

মিরাজুন্নবী (দ.) ও সালানা ওরছে অধ্যক্ষ মুনির উল্লাহ্‌

| শুক্রবার , ১২ মার্চ, ২০২১ at ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ

ইসলাম আল্লাহর দেওয়া একমাত্র জীবন বিধান। ইসলামের সুমহান বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পৃথিবীতে অসংখ্য নবী ও রাসুল এসেছেন। নবুয়তের পরিসমাপ্তির পর সেই দায়িত্ব পালন করে চলেছেন আল্লাহর অলিগণ। তারই ধারাবাহিকতায় খলিফায়ে রাসুল হযরত গাউছুল আজম (রা.) সেই পথে আজীবন আহবান করে গেছেন শরীয়তের বিধি বিধানের উপর অটল ও অবিচল থেকে, সুন্নতে রাসুলকে প্রতিষ্ঠার জন্য নজিরবিহীন শ্রম ও ত্যাগ দিয়েছেন। নবীজির মুহাব্বতে নিজেকে এমনভাবে উৎসর্গ করেছেন যে এখলাসের সাথে এক এক করে জীবনে নবীর সব সুন্নত বাস্তবায়ন করেছেন। প্রিয় রাসুল (দ.) ও উনাকে ভালোবাসার প্রতিদান স্বরূপ খলিফায়ে রাসুলের মর্যাদা দান করেছেন। প্রিয় রাসুলের (দ.) ঐতিহাসিক মুজেযা পবিত্র মেরাজ। আল্লাহর সাথে নবীর স্বশরীরে সাক্ষাতের প্রেমময় মূহূর্ত মেরাজুন্নবীর সময়ে। খলিফায়ে রাসুল হযরত গাউছুল আজম (রা.) এঁর পবিত্র বেছাল শরীফও মেরাজের বরকতময় সময়ে। পবিত্র বেছাল শরীফ স্মরণে আয়োজন করা হয় সালানা ওরশে পাক। এটি এমন এক ওরছে পাক যেখানে শরীয়তের বিন্দুপরিমাণ খেলাপ নেই। গরু মহিষ টাকা পয়সা নজর নেওয়াজ ইত্যাদি আনার অনুমতি নেই, এখানে আসতে গেলে একটি জিনিস লাগে সেটা হলো খালেছ অন্তরে আসা। এই ওরছে পাকে অনুষ্ঠিত হয় খতমে কোরআন, খতমে তাহলিল, নফল নামাজ-রোজা, দরূদ শরীফ পড়ার মাধ্যমে। আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল এবং খুলুছিয়তের উপর হযরত গাউছুল আজম (রা.) সারা জীবন কাটিয়েছেন। তারই বহিঃপ্রকাশ এই মহান ওরছে পাকের আয়োজন। এখানে দুনিয়াবি লোভ লালসার উর্ধ্বে উঠে এখলাসের সাথে সবকিছু আদায় করা হয় বলে খোদায়ীভাবে স্বীকৃতি মিলে। তাবাররুকের মাংসের টুকরায় অলৌকিকভাবে আল্লাহু নকশা উঠে যা কবুলিয়তের নিদর্শন। হযরত গাউছুল আজমের ওরছে পাক এমন এবাদত ও এখলাসের জৌলুশে উদযাপিত হয় যা আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় হযরত গাউছুল আজম (রাঃ) কত উচ্চ পর্যায়ের মনীষী, প্রতিটি ক্ষেত্রে কোরআন সুন্নাহর প্রতিফলন হয় এই মকবুল ওরশে পাকে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাদে এশা হতে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদের গাউছুল আজম সিটিতে অনুষ্ঠিত কাগতিয়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা খলিফায়ে রাসূল হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম (রা.) স্মরণে ৬৬তম পবিত্র মিরাজুন্নবী (দ.) উদযাপন ও সালানা ওরছে হযরত গাউছুল আজমের (রা.) ঈছালে ছাওয়াব মাহফিলে মোর্শেদে আজম আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুনির উল্লাহ্‌ আহমদী (মা.জি.আ.) বক্তব্যে এ কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ড. আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সালানা ওরছে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ নূর খাঁন, প্রফেসর ড. জালাল আহমদ, আল্লামা ইসহাক মুনিরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সরোয়ার কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকুর রহমান। এদিন ফজরের নামাজের পর খতম শরীফ, মোরাকাবা, ঈছালে ছাওয়াব, মিলাদ-কিয়াম ও মুনাজাতের পর খতমে কুরআন অদায়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ওরছের কর্মসূচি। পূর্ব ষোষিত তারিখ থেকে মহিলা, প্রবাসী, তরিক্বতপন্থী ও উপস্থিত মুসলিম জনতা সর্বমোট ১৩৬৭১টি খতমে কোরআন এবং ৯৫৪টি খতমে তাহলীল আদায় করেন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও কাগতিয়া দরবার থেকে পূর্বেই ঘোষণা হয়েছিল ওরছে কারোর কাছ থেকে গরু, মহিষ, ছাগল, টাকা-পয়সা, নজর-নেওয়াজ ইত্যাদি নেওয়া হবে না, চলবে না শরীয়ত পরিপন্থী কোন কার্যকলাপ, শুধু কোরআন-সুন্নাহর পূর্ণ অনুসরণে পালিত হবে এ মহামনীষীর সালানা ওরছ। অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে সবার মুখেমুখে শুধু উচ্চারিত হচ্ছে সুমধুর সুরে কুরআন তিলাওয়াত, তাহলিল ও নিম্নস্বরে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌ জিকির এবং নবী (দঃ)’র শানে দরুদ পাঠ। এ যেন এক অভূতপূর্ব দৃশ্য, প্রশান্তিময় পরিবেশ। শুধু দেশের নয়, সপ্তাহজুড়ে বাংলাদেশে আসা বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মধ্যপ্রাচ্য, সৌদিআরব, অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কাগতিয়া দরবারের শতশত অনুসারী এতে অংশ নেয়। জোহরের পূর্ব পর্যন্ত চলতে থাকে এ কার্যক্রম। বিদেশে অবস্থানরত এ মনীষীর অনুসারীরাও বাদ পড়েননি, তারাও এদিন স্বস্ব স্থানে বসে আর মহিলারা নিজেদের ঘরে বসে কুরআন তিলাওয়াত করতে থাকেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসু চি অবৈধভাবে সোনা ও ৬ লাখ ডলার নিয়েছেন, বলছে জান্তা
পরবর্তী নিবন্ধদুই জনের ১৭ বছর কারাদণ্ড