চট্টগ্রাম–১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ বলেছেন, সারাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে মোট বিনিয়োগের ৪০ শতাংশ ব্যয় হয়েছে এই চট্টগ্রাম অঞ্চলে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ম্যাজিকের মতো ঘুরাতে থাকবে। এই গভীর সমুদ্রের কারণে আমাদের আজকে ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্টের প্রয়োজন হবে না। এখন কন্টেনার নিয়ে জাহাজগুলো চট্টগ্রাম থেকে একবার সিঙ্গাপুর যায়, একবার কলম্বো যায়। আমি মনে করি, বিভিন্ন বন্দরে ধর্ণা দেয়ার দিন শেষ হয়েছে। কন্টেনার নিয়ে জাহাজ এখন সরাসরি আমেরিকা যাবে, ইউরোপ যাবে, জাপান যাবে।
গতকাল সোমবার রাতে হোটেল রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ’র মোহনা হলে এফবিসিসিআইয়ের (২০২৩–২৫) নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্যানেল পরিচিতি উপলক্ষে আয়োজিত ‘ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির যাত্রায় বন্দর নগরীর তাৎপর্য শীর্ষক’ আলোচনা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এফবিসিসিআই নির্বাচনে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্যানেল লিডার, চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম এ সভার আয়োজন করেন।
আমলাদেরকে উদ্দেশ্য করে এম এ লতিফ বলেন, আমাদের কিছু আমলা বঙ্গবন্ধুকন্যা যা চায়, তার উল্টোটি করছেন। আমার মতো তাদের জ্ঞানের স্বল্পতার জন্য তারা এগুলো করছেন। ব্যবসায়ীদের তারা যে চোখে দেখে, তাদের চোখের দৃষ্টি সোজা করতে হবে। এই দেশে মানুষের কর্মসংস্থান করে এই ব্যবসায়ীরা, নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করে আমদানি নির্ভরতা কমায় এই ব্যবসায়ীরা। আর রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা এনে দেশের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা। ট্যাক্স দেয় ব্যবসায়ীরা, ভ্যাট দেয় ব্যবসায়ীরা, ডিউটি দেয় ব্যবসায়ীরা, আর কথা বলে ওই সরকারি কর্মচারীরা। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এই ব্যবসায়ীদের কাঁধে ভর করে। পাবলিক সেক্টরে অনেক প্রতিষ্ঠান লোকসান গুনছে, সেজন্য কোনো সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীর বাড়িঘর নিলাম হয়নি। আমাদের ব্যবসায়ীদের ঋণখেলাপি হতে হয়, কাটগড়ায় দাঁড়াতে হয়।
ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্যানেল লিডার ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমের বিষয়ে এম এ লতিফ বলেন, মাহাবুবুল আলম একজন অত্যন্ত ভদ্র, বিনয়ী। তার ধ্যান ধারণার সবটুকু ব্যবসাকে নিয়ে। আমি আশা করবো, আপনারা ওনার পূর্ণ প্যানেলকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।
ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্যানেল লিডার ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম তার পুরো প্যানেলকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, আশাকরি মাহবুব ভাই বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের নেতা। চট্টগ্রামের মানুষ দেশকে ভালোবাসে। সব ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে মাহবুব ভাইয়ের হাত ধরে। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় ব্যবসায়ীদের সমস্যার সমাধান করবেন। বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশকে এগিয়ে নিয়েছেন। শিল্প হলে কর্মসংস্থান হবে।
পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা বাংলাদেশের লিডার। মাহবুবুল আলম গ্রেট লিডার। আপনারা সোনার বাংলাকে হীরের বাংলা করবেন। আপনারা জাতির জন্য, মানুষের জন্য কাজ করবেন। কোভিডকে মোকাবিলা করেছেন বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা।
চট্টগ্রাম উইম্যান চেম্বার সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নজর চট্টগ্রামে আছে। উনি আছেন বলেই চট্টগ্রামকে সমৃদ্ধ করছেন। টানেল উদ্বোধন হবে। কথা কম বলেন, কাজ করেন বেশি। ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সবাই সফল ব্যবসায়ী। ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে এসএমই খাত অবদান রাখবে। আপনারা মাহবুব ভাইয়ের পূর্ণ প্যানেলে ভোট দেবেন।
বিজিএমইএ প্রথম সহ সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যবসার গতি বাড়াতে কাজ করেছেন মাহবুবুল আলম। বঙ্গবন্ধু কন্যা যার ওপর আস্থা রেখেছেন। চট্টগ্রাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশের জন্য। বিজিএমইএ অনেক সমস্যা মোকাবেলা করছে। বে টার্মিনাল যাতে দ্রুত এগিয়ে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি চট্টগ্রাম চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, আইকনিক বিজনেস লিডার মাহবুবুল আলম এফবিসিসিআইর ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্যানেল লিডার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি চমৎকার ব্যবসায়ী নেতা। বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের ইতিহাস ঐতিহ্য তিনি ধারণ করেন। তাঁর আন্তরিকতার কারণে প্যানেল লিডার মনোনীত করেছেন। বাংলাদেশকে আগামীতে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশে রূপান্তর করতে চাই আমরা। মীরসরাই শিল্পনগরে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম হবে লজিস্টিক হাব। এসএমই ও নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে কাজ করতে হবে। ব্লু ইকোনমিতে বিরাট সম্ভাবনা আছে, ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির জন্য একে কাজে লাগাতে হবে। বিনিয়োগের কেন্দ্রবিন্দু হবে চট্টগ্রাম। মাতারবাড়ীতে পাওয়ার ও শিপিং হাব হবে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন কঙবাজার–২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, বারভিডার সভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন, বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ–সভাপতি আবদুস সালাম, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ, এফবিসিসিআইয়ের সহ–সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সিকম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আমিরুল হক, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, মীর গ্রুপের কর্ণধার আবদুস সালাম, বাফার সহ সভাপতি খায়রুল আলম সুজন, ফ্রোজেন ফুড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুব রানা, নাহার অ্যাগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুর রহমান টুটুল, লবণ মিলস মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির, চট্টগ্রাম চেম্বারের সহ সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশনের আবদুল মান্নান, শিপ ব্রেকিং অ্যাসোসিয়েশনের আবুল কাশেম, ফার্নিচার মালিক সমিতির মো. মাসুদুর রহমান, দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি ছালামত আলী, দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি সালেহ আহমদ সুলেমান, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি বাবুল আকতার প্রমুখ।