এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল পাস

প্রয়োজন মনে করলে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়াতে পারবে সরকার

| সোমবার , ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:২১ পূর্বাহ্ণ

সংসদে বিরোধিতার মধ্যে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে; যদিও এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের বলে সংশোধিত আইন কার্যকর হয়ে গেছে। সংশোধিত আইনে বিশেষ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম সরাসরি বাড়ানো বা কমানোর ক্ষমতা সরকারের কাছে নেওয়া হয়েছে। এত দিন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করত। এখন দাম বাড়ানোর জন্য এই শুনানির দরকার হবে না। সরকার প্রয়োজন মনে করলে দাম বাড়াতে পারবে। খবর বিডিনিউজের।

গত ১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইনের এই ধারায় সংশোধন আনা হয়। সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির পর জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের প্রথম বৈঠকেই অধ্যাদেশটি সংসদে উপস্থাপন করতে হয়। সে অনুযায়ী গত ৫ জানুয়ারি অধ্যাদেশটি সংসদে তুলেছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সংসদীয় কমিটি হয়ে আসার পর গতকাল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করেন। তখন এ বিলের বিরোধিতা করে জাতীয় সংসদ থেকে ওয়াক আউট করেন গণফোরামের নেতা মোকাব্বির খান। তিনি বলেন, এ বিলটি ‘জনস্বার্থবিরোধী’। তার জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী গ্রহণ করেননি। তাই নিজের সংশোধনী প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন এবং জনস্বার্থে এ বিলের প্রতিবাদে সংসদ থেকে ওয়াক আউট করছেন তিনি। মোকাব্বিরসহ কয়েকজন সদস্য বিলের উপর আলোচনা করেন। জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বলেন, পানির ট্যাংকে নিচে ফুটো থাকলে কখনোই তা ভরাট করা যাবে না। যতদিন পর্যন্ত রেন্টাল, কুইক রেন্টাল থাকবে, ততদিন এখানে লস থাকবে।

বিলটি জনমত যাচাইয়ের জন্য পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে মোকাব্বির খান বলেন, সরকার গত ১৪ বছরে ১১ বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে দুরবস্থার কারণ লুটপাট আর দুর্নীতি। ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বসিয়ে রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। মানুষ দিশেহারা। সামনে রমজান। এর আগে আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে মানুষের কষ্ট বেড়ে যাবে।

বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুতে যে সাবসিডি, সেটা মূলত জনগণের প্রতি ইনভেস্টমেন্ট। কুইক রেন্টাল ব্যবস্থা ছিল স্বল্পমেয়াদী ব্যবস্থা। ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ দেওয়ার বিষয়টি বোঝাতে গিয়ে উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ১০ বছরের জন্য একটি বাড়ি ভাড়া নেওয়া হলে সেখানে থাকুন বা না থাকুন ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। এমন বলা যাবে না যে যে কয়দিন থাকবেন সে কয়দিনের ভাড়া দেবেন।

এরপর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলের উপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিস্পত্তি শেষে এটি কণ্ঠভোটে দেন, তাতে সংসদ সদস্যরা তা পাস করেন।

বিলে বলা হয়েছে, এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছু থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার প্রজ্ঞাপন দিয়ে ভর্তুকি সমন্বয়ের জন্য জনস্বার্থে কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসাবাণিজ্য ও গৃহস্থালি কাজের চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে এসবের উৎপাদন বৃদ্ধি, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করতে পারবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচকবাজারে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে আগুন
পরবর্তী নিবন্ধপদুয়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যানের বসতঘরে আগুন