নতুন আঙ্গিকে জাতীয় লিগ টি–টোয়েন্টি (এনসিএল টি–টোয়েন্টি) শুরুর পর গত আসরটি আয়োজন করা হয়েছিল সিলেটে। এবার টুর্নামেন্ট ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে আরও। দেশের তিনটি ভেন্যুতে হবে এবারের টুর্নামেন্ট। সিলেট ছাড়াও খেলা হবে বগুড়া ও রাজশাহীতে। গতবারে টুর্নামেন্টটি হয়েছিল ডিসেম্বর মাসে। এরপরই নানা জায়গা থেকে দাবি উঠেছিল বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফটের আগে এনসিএল টি–টোয়েন্টি আয়োজনের। যাতে স্থানীয় ক্রিকেটাররা নিজেদের মেলে ধরতে পারেন। সেই দাবি মেরে এবারের আসরটি হতে যাচ্ছে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি। এবার ভেন্যু বাড়াতে হতে পারে বলে একটি আলোচনা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান সংবাদমাধ্যমে মুখোমুখি হয়ে নিশ্চিত করলেন সেটি। তিনি বলেন এটা নিয়ে আমাদের লম্বা একটা সভা হয়েছে। ভেন্যু পাওয়াটা আসলে কঠিন ছিল। কারণ এক জয়গায় দুটি করে মাঠ দরকার। অনেক চিন্তা করে আমরা ঠিক করেছি বগুড়া, রাজশাহী ও সিলেটে করব এই টুর্নামেন্ট। এই তিনটা জায়গায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।
সিলেট এখন দেশের মূল ক্রিকেট ভেন্যুগুলোর একটি। রাজশাহীতে কিছুদিন ধরে ঘরোয়া নানা টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হচ্ছে। গত মে মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা হাই পারফরম্যান্স দলের সঙ্গে বাংলাদেশ হাই পারফরম্যানস দলের সিরিজও হয়েছে সেখানে। ম্যাচগুলোয় গ্যালারিতে দর্শক উপস্থিতি ছিল দেখার মতো। ক্রিকেটকে ঢাকার বাইরের সমর্থকদের কাছে পৌঁছে দিতেই তিন ভেন্যুতে খেলা আয়োজনের এই সিদ্ধান্ত বলে জানালেন আকরাম খান। তিনি বলেন বগুড়ায়তো আসলে বিপিএলেও অনেক চাহিদা আছে। ওরা সবসময় বলে। আমরা চেষ্টা করছি ক্রিকেটকে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে। বগুড়ায় আগে অনেক খেলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হয়েছে। সেটা আমাদের মাথায় আছে। রাজশাহীতে অনেক ক্রিকেট ভক্ত আছে। ভালো ভালো ক্রিকেটার উঠে এসেছে ওখান থেকে। টুর্নামেন্টের সেমি–ফাইনাল ও ফাইনাল হয়তো আমরা দিন–রাতের ম্যাচ করব। সেটার জন্য আমরা সিলেটে পরিকল্পনা করছি।
ভেন্যুগুলোয় যা যা ঘাটতি আছে, আগামী কিছুদিনের মধ্যে সব কিছু ঠিকঠাক করে ফেলতে চায় বিসিবি। বিশেষ করে উইকেটের মান ভালো রাখায় জোর দেওয়ার কথা বলেলন আকরাম। আমরা প্রথমে চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামের (সাবেক এমএ আজিজ স্টেডিয়াম) কথা চিন্তা করেছিলাম। যেহেতু সেখানে লাইট আছে (দিন–রাতের ম্যাচের জন্য)। কিন্তু চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে ভালো উইকেট আমরা পাব না। এজন্য বাতিল করেছি। বগুড়ায় যেটা শুনলাম, মোটামুটি ভালো অবস্থায় আছে সবকিছু। আমাদের হাতে যেহেতু এখনও ৪০ দিনের মতো আছে। গ্রাউন্ডস বিভাগ থেকে কালকে লোকজন যাবে। ওরা দেখে–দেখে বলবে যে কী কী লাগবে। আমরা অবশ্যই ভালো উইকেটে খেলতে চাই যাতে টি–টোয়েন্টিতে প্রচুর রান হয়। এই ব্যাপারটা আমাদের মাথায় আছে। উইকেট ও অন্যান্য সুযোগ–সুবিধা আমরা ভালো দিতে চাই। গতবার ম্যাচ ফি ছিল ২৫ হাজার। এবার সেটা বাড়িয়ে ৪০ হাজার করেছি। অন্যান্য সুবিধাও আমরা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। শুধু উইকেট বা মাঠের সুযোগ–সুবিধা নয়, সব দিক থেকেই এনসিএল টি–টোয়েন্টিকে আন্তর্জাতিকমানের আসরে রূপ দিতে চাওয়ার লক্ষ্যের কথা বললেন আকরাম। ম্যাচে অনেকে অনেক ধরনের হেলমেট পরে খেলে। সেখানে আমরা পরিবর্তন আনছি। প্রতিটি দলকে আমরা হেলমেট দেব। পুরোটা যেন ডিসিপ্লিনড ও গোছানো থাকে। ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে সবাইকে সবার সাপোর্ট করতে হবে। সেসব নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। স্পন্সরদেরও দায়িত্ব আছে। ওদের প্রতি আমাদের করণীয় কী আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ডে আমরা সবকিছু করার চেষ্টা করব। এবারই হয়তো সবটুকু পারব না তবে আস্তে আস্তে সব করার চেষ্টা করব।