অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ এগিয়ে নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে উপমহাদেশে এত বড় রেভ্যুলেশন তো নিশ্চয় না, পৃথিবীর কোথাও আমার মনে হয় না হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা এখন সংস্কার বা নির্বাচনের কথা বলছি। এই সময়ে যদি আমরা কিছু সংস্কার না করতে পারি, তাহলে আর কখনই করা যাবে না।
কার্যকর সংস্কার না করলে জুলাইয়ের আন্দোলনে নিহতদের প্রতি অন্যায় করা হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখন যদি করা না যায়, এখন যদি আমরা সংবিধানের দোহাই দিই, আমরা অন্যান্য আইনের দোহাই দিই, যদি না করতে পারি, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, দুই হাজার জন রক্ত দিয়ে শহীদ হয়েছে, তাদের প্রতি আমি বা আমরা অন্যায় করব। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল শনিবার ঢাকার ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক সংলাপে কথা বলছিলেন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন। ২০০৭ সালে সেনাশাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সে সময় আমরা কিছুটা (সংস্কার) করেছিলাম, পরে আর সেগুলো থাকেনি রাজনৈতিক দল যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের কারণে। আমি বলছি না আমরা পাঁচ বছর–ছয় বছর থাকব; সংস্কার যেকোনো সময় করা যায়। হয়ত এক বছর সময় লাগতে পারে। তারপর আপনি নির্বাচনে গেলেন। এখানে যেটা দরকার, রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝাপড়া।
নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারে জোর দিয়ে সাখাওয়াত বলেন, নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে অনেকরকম কথা আছে। আমরাও এটা নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি। আমার মত ছিল এটা হবে আংশিক সংখ্যানুপাতিক, আংশিক সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। দুটোই যৌক্তিক মনে হয়েছে আমার কাছে। দ্বি–কক্ষ অবশ্যই হতে হবে বাংলাদেশে। দ্বি–কক্ষ যদি হয়, তাহলে আমি মনে করি সে জায়গাতে বিভিন্ন রকমের মানুষ আসবে এবং তারা একটা গাইডলাইন তৈরি করতে পারে; তাতে নির্বাচনের আগে হয়ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আলাদা করে প্রয়োজন হবে না।
দলের খরচ যোগাতে চাঁদাবাজি বন্ধের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘পলিটিক্যাল পার্টি অ্যাক্ট’ না হলে রাজনৈতিক দলগুলোর যে দায়দায়িত্ব কতগুলো, সেগুলো কিন্তু আমরা দেখছি না। আমরা দেখছি রাজনৈতিক দল তৈরি হয়, তারপর কোন্দল শুরু হয়। এক দল আরেকদলকে খেয়ে ফেলে। তাই এই আইন জরুরি। আপনি আজকে সেনাবাহিনী বা সিভিল সার্ভিসে আছেন, রিটায়ার করার পরে আপনি এমপি হতে চান। আর যারা বিজনেস করছেন, তার সঙ্গে রাজনীতির কোনো বিষয় নেই, তিনি চট করে এসে রাজনীতিবিদ হয়ে গেলেন। কারণ তিনি ৬ থেকে ৮ কোটি টাকা খরচ করলেন নমিনেশনের জন্য। যেটাকে আমরা বলছি, নমিনেশন বাণিজ্য, এটা বন্ধ করতে হবে।