ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আর তিন মাস বাকি থাকায় এখনই থেকেই সবকিছু নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত বলে মনে করছে বিএনপি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা তুলে ধরেছে দলটি। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন। ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের তিন মাস আছে। এখন থেকে নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে যেটা থাকে, সেটা আলোচনায় এসেছে যে এখন থেকে হওয়া উচিত। কারণ একবার বিতর্কিত হয়ে গেলে সেটা সমস্যা হয় এজন্য এখন থেকে সরকারের যেসব সিদ্ধান্ত আসছে যে সিদ্ধান্তগুলো নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে, নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে পারে, সেগুলো এখন থেকে নির্বাচন কমিশনের অবগত থাকা উচিত। নির্বাচন কমিশনে একটা ভূমিকা থাকা উচিত এই বিষয়টা আলোচনা উঠেছে।
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের বৈঠকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন, নির্বাচনি প্রক্রিয়া, নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আমীর খসরু। এছাড়া ব্যবসা–বাণিজ্যসহ দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কিছু বিষয়ও আলোচনায় উঠে এসেছে।
আমীর খসরু বলেন, ইইউয়ের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল নির্বাচন। নির্বাচই প্রক্রিয়া নিয়ে সবার মধ্যে আলোচনা রয়েছে। এই বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এই নির্বাচনে অবজারভার পাঠাবে… নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে অনুরোধ এসেছে সেজন্য তারা (ইইউ) সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তারা অবজারভার পাঠাবে। বাংলাদেশের নির্বাচনে সবসময়ে ইইউয়ে একটা কনট্রিবিউশন থাকবে.. এবারও আছে। তারা আগ্রহভাবে অপেক্ষা করছে যে, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনটা সম্পন্ন হয়, ইলেক্টোরাল প্রসেসের মধ্যে যাতে স্বচ্ছতা থাকে তারা আশা করছে এটা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার ক্ষেত্রে সংসদ থেকে শুরু করে, গুড গভর্নেন্স থেকে শুরু করে, জুডিশিয়ারি থেকে শুরু করে সব কিছুতে তারা সহযোগিতা করতে চায়, তাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
বিএনপি ইইউকে স্বাগত জানিয়েছে মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলাপ করেছি। যে বিষয়গুলো নিয়ে গণতন্ত্র কাজ করে সেগুলোকে অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। গণতান্ত্রিক কালচারটা ফিরিয়ে আনতে হবে, যে ভ্যালুজগুলো নষ্ট হয়ে গেছে সেটাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি।
জাতীয় সংসদকে শক্তিশালী ও আরো কাযর্কর করার জন্য যে কাজগুলো আছে তাতে ইইউ সহযোগিতার কথা বলেছে বলে জানিয়েচেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, ব্যবসা–বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইইউতে ডিউটি ফ্রি মার্কেট অ্যাকসেস যেটা আছে সেটা তারা অব্যাহত রাখতে চায় এবং আগামী দিনে তারা চায় দুই দেশের মধ্যকার ব্যবসা বাণিজ্য অব্যাহত থাকে।