বিস্ফোরক মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। পথে গাড়ি থামিয়ে টানা–হেঁচড়া, পুলিশকে মারধর করে সেই আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। গত ২১ নভেম্বর সংঘটিত চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার এক মাসের বেশি সময় পার হলেও ছিনতাই হয়ে যাওয়া আসামি রায়হানের এখনো নাগাল পায়নি পুলিশ। ঘটনাস্থল আকবরশাহ’র বাংলাবাজার এলাকায় একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হলেও এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ।
পুলিশের ভাষ্য, বিস্ফোরক মামলার আসামি রায়হান খুবই ধূর্ত প্রকৃতির। বেশ কয়েকবার ট্র্যাক করা সম্ভব হলেও বারবার স্থান পরিবর্তন করায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার এ ঘটনায় নগর ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে আকবরশাহ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। মামলাটি তদন্ত করছেন উপপরিদর্শক (এসআই) তৌহিদুল ইসলাম।
তিনি গতকাল দৈনিক আজাদীকে বলেন, ধূর্ত, চালাক রায়হান ও তার সহযোগীদের ধরতে বাংলাবাজার এলাকায় বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু তাদের কাউকে আমরা পাইনি। তবে রায়হানকে বেশ কয়েকবার ট্র্যাক করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বারবার স্থান পরিবর্তন করায় তাকে আমরা গ্রেপ্তার করতে পারিনি। গত ২১ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর আকবরশাহ’র বাংলাবাজার এলাকায় আসামি রায়হান উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গাড়ি থামিয়ে টানা হেঁচড়া, পুলিশ সদ্যসদের মারধর করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার এ ঘটনায় তখন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নাছির উদ্দিন নামের নগর ডিবি পুলিশের একজন কনস্টেবল আহতও হয়েছেন। ছিনতাই হওয়া রায়হান উদ্দিন সীতাকুণ্ড থানার একটি বিস্ফোরক দ্রব্য ও দণ্ডবিধি আইনের মামলার আসামি। পুলিশ বাংলাবাজার এলাকায় তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে এবং ঘটনার সাথে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন, মো. মফিজ, মো. ইকবাল, মো. আবুল ফয়েজ ও মো. শিমুল মিয়া। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত এ চারজনসহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে আকবরশাহ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয় ৫০ থেকে ৬০ জনকে। নগর ডিবি পুলিশের এসআই মো. আমির হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মো. শাহীন, মো. মাসুদ, মো. শাহী আদনান, মো. শাহী ইমরান জাওয়াদ, মো. রকি, মো. ফারুক, মো হোসেন ও রায়হান উদ্দিন (যিনি ছিনতাই হয়েছেন)।
পুলিশ জানায়, পলাতক আসামি মো. শাহীনের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে বিষ্ফোরক মামলার আসামি রায়হানকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। রায়হানকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার মামলার বাদী ডিবি পুলিশের এসআই মো. আমির হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমার টিমের ওপর হামলা করে সেদিন বিষ্ফোরক মামলার আসামি রায়হানকে ছিনিয়ে নেওযা হয়েছিল। ঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে আকবরশাহ থানায় একটি মামলা দায়ের করি। থানা পুলিশ মামলাটির তদন্ত করছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এটি পুলিশ এসল্ট মামলা ও আসামি ছিনতাইয়ের মামলা। পুলিশের গাড়ি থামিয়ে মারধর করে আসামি ছিনতাই করা হয়েছিল। মামলাটি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের সোর্সরা কাজ করছে। যেকোনো সময় তাকে আমরা পেয়ে যাব।