কার্যাদেশ প্রাপ্তির দুবছরের মধ্যে ছয় তলা বিশিষ্ট বান্দরবানের রুমা উচ্চ বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিলো। অথচ কাজের কার্যাদেশ (অনুমতিপত্র) দেয়ার চৌদ্দ মাস পরও স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজটি নানা অজুহাতে শুরুই করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। পুরনো ভবনটি ভেঙে ফেলায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরাও পড়েছে চরম বেকায়দায়। স্থানীয়দের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে যে, আদৌ কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদারের পক্ষে কাজটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কি-না। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ ২০১৯ সালের প্রথমদিকে রুমা হাইস্কুল ভবন নির্মাণের টেন্ডার আহবান করে। টেন্ডারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এমএম ট্রেডিং লাইসেন্সের নামে ছয়তলা বিশিষ্ট স্কুল ভবন নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয় একই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর। প্রতিষ্ঠানের মূলত কাজটি করছেন ঠিকাদার মো. জাফর আলম। এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ কাজটি ২ বছরের মধ্যে শেষ করে কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তরের কথা উল্লেখ রয়েছে কার্যাদেশে। কিন্তু কার্যাদেশ পাওয়ার চৌদ্দ মাস পরও নির্মাণ কাজ শুরুই করেনি ঠিকাদার। অথচ কাজের বিপরীতে পর্যাপ্ত বরাদ্দও রয়েছে প্রতিষ্ঠানে। স্থানীয় বাসিন্দার চনুমং মারমা, শৈচাসিং মারমা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদারকে নতুন ভবনের কার্যাদেশ দেয়ায় স্কুল পরিচালনা কমিটি তড়িগড়ি করে স্কুলের পুরনো ভবনটি শ্রমিক দিয়ে ভেঙে ফেলেছে। কিন্তু ভবন ভাঙ্গার দীর্ঘদিন পরও নতুন ভবন নির্মাণের কাজটি এখনো শুরু করেনি ঠিকাদার। অথচ রুমা উপজেলার একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় এটি। নতুন বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলেও শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারবে না। শুধুমাত্র ঠিকাদারের অবহেলায় নির্ধারিত সময়ে ভবনটি নির্মাণ না করায় দায়িত্ব অবহেলার জন্য ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক কয়েকজন বলেন, ঠিকাদার জাফর অফিস ম্যানেজ করে কাজের অগ্রগতির চেয়েও দ্বিগুণ টাকা বিল উত্তোলন করে ধীরগতিতে কাজ করেন। কাজের গুণগত মানও ঠিক থাকে না তার। রুমা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ অভিযোগ করে বলেন, পুরনো ভবনটি প্রায় তিন মাস আগে ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিন্তু নতুন ভবনের নির্মাণ এখনও শুরু হয়নি। ভবন নির্মাণের কোনো মালামালও আনতে দেখছি না। কী হবে বিষয়টি বুঝতে পারছি না। প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলাম, তারাও এ সপ্তাহে, আগামী সপ্তাহে কাজ শুরু করবে বলে জানাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার মো. জাফর আলম বলেন, স্কুল ভবন নির্মাণ কাজটি টেন্ডারে আমি পেয়েছি। এসএসসি পরীক্ষা, করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করতে না দেয়া এবং পুরনো টিনশেড স্কুল ঘরগুলো না ভাঙায় কাজ শুরু করতে পারিনি। তবে এ সপ্তাহেই আশা করি লে-আউট নিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করবো। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের দায়িত্বশীল সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম বলেন, করোনায় লকডাউনের জন্য কাজে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে দ্রুত কাজটি শুরুর জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ঠিকাদার ভবন নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়নে মালামাল মজুত করছেন বলে জেনেছি।