বান্দরবানে সদর উপজেলার ক্যায়ামলং খালের ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিনও ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে বিশটি গ্রামের শতশত মানুষ। যে কোনো মুহুর্তে বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের।
জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের ক্যায়ামলং পাহাড়ি খালের উপের নির্মিত ব্রিজটি ২০১৯ সালের বন্যায় নীচের দিকে দেবে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। গতবছরের বন্যায় ব্রিজটি বাঁকা হয়ে একপাশে হেলে পড়েছে। অন্যদিকে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে মধ্যখানে ঢালাই ভেঙে ছোটবড় অনেকগুলো গর্ত তৈরি হয়েছে। ঢালাই ভেঙে যাওয়ায় ব্রিজের লোহাগুলো দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। ভাঙা ফাকাগুলো দিয়ে দেখা যাচ্ছে খালের নিচের অংশও। এতে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে চলাচলকারী বান্দরবান–রাঙামাটি সড়কের কুহালং হয়ে গোয়ালিখোলা–চেমিরমুখ এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের চন্দনাইশসহ অভ্যন্তরীণ সংযোগ সড়কটির বিশ গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। তবে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে ইটেরভাটা মালিকেরা ভাঙা অংশে গাছপালা দিয়ে ইটের টুকরো ফেলে কোনো রকম সড়ক যোগাযোগ চালু রেখেছে।
স্থানীয় বাসিন্দার নুমং প্রু ও মংচু মারমা অভিযোগ করে বলেন, ছয় বছরের বেশি সময় ধরে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ। গতবছরের বর্ষায় পাহাড়ি ঢলে ব্রিজটি বাঁকা হয়ে একপাশে হেলে পড়েছে। এতে ব্রিজটি আরও বিপজ্জনক হয়ে গেছে। ঢালাই ভেঙে ব্রিজের লোহার ফাঁকা দিয়ে খালের গভীরতা দেখা যাচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিনই ক্যম্পং পাড়া, নোয়া পাড়া, সাইংশৈমং কার্বারী পাড়া, তেতুলিয়া পাড়া, মংপ্রু কার্বারী পাড়া বিশ গ্রামের মানুষজন চলাচল করে।
কুহালং ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মংক্যচিং মারমা জানান, কয়েকবার এসে প্রকৌশল বিভাগের লোকজন ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি পরিদর্শন করে মেপে নিয়ে গেছে। কিন্তু বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুটি মেরামত বা নতুন সেতু নির্মাণের কাজটি শুরু হয়নি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। বরাদ্দ না থাকায় সেতুটি নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করা যাচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সিনিয়র প্রকৌশলী মো. জামাল উদ্দিন জানান, সংযোগ সড়কগুলো নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
বরাদ্দ না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ব্রিজটি অগ্রাধিকার প্রকল্পে রয়েছে। ইতিমধ্যে ব্রিজের নকশা ও ব্যয়ের স্কিম অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। খুব দ্রুতই ব্রিজের কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী।