সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য সম্পদ নিশ্চিত করতে বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও জেলেরা নৌকা নিয়ে সাগরে মাছ ধরছে প্রতিদিন। চলমান নিষেধাজ্ঞার সময়ে অবৈধ জাল অপসারণে গত এক সপ্তাহ টানা অভিযান চালিয়েছে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা। নৌপুলিশও অভিযান চালিয়ে চরঘেরা জাল উদ্ধার করছে।
মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ডে এক সপ্তাহের একটানা অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২৭০০ টাকা মূল্যের ১৫ কেজি মাছ জব্দ ও ৫০০ টাকা জরিমানা করে ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া দৈনিক অভিযানে ৭৫ হাজার মিটার চরঘেরা, বেহন্দি, কারেন্ট জাল ও নেট জাল জব্দ করা হয়েছে। এসব অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মৎস্য কর্মকর্তাসহ নৌ–পুলিশ, কোস্টগার্ড ও থানা পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিলেন।
ন্যায্য প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসই মৎস্য সম্পদ নিশ্চিত করতে বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মাছ ধরা গত ২০ মে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ৬৫ দিনের জন্য বন্ধ রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা ২৩ জুলাই পর্যন্ত বহাল থাকবে। মৎস্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলমান এ সময়ে জেলেদের কষ্ট হয় কথাটি সত্যি। তবু বৈজ্ঞানিকভাবে বিচার–বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত এ সময়ে মাছের প্রজনন সবচেয়ে বেশি হয়। তাই সরকারের এমন সিদ্ধান্ত।
সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির আহমেদ বলেন, নিবন্ধিত সাগরে মাছ ধরা প্রত্যেক মৎস্য চাষিকে ৫৬ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্নভাবে আর্থিক সহযোগিতাও করা হচ্ছে মৎস্যচাষিদের।
জেলেরা বলেন, গত কয়েক বছর ধরে নানা কারণে তাদের আয় এমনিতেই অনেক কমে গেছে। এখন ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় সংসার চালাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারা বলেন, এভাবে লম্বা সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় পরিবার চালানো কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে পড়েছে। শুধু চাল দিয়ে তো আর সংসার চলে না।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, মাছের প্রজনন বাড়াতে সরকার ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছে। নিষেধাজ্ঞার সময় সরকার জেলেদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে এ উপজেলার ৪ হাজার ৮০৫ জেলেকে ৫৬ কেজি ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলায় ১৬টি মাছের ঘাট রয়েছে। এতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া মাছের বাজার ও বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
কুমিরা কোস্টগার্ডের আরইএফও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, সরকারি নির্দেশনার আলোকে মাছ ধরা বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। চরঘেরা, বেহন্দি ও কারেন্ট জাল উদ্ধার করা হয়েছে।