চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সব উত্তেজনা শেষ করে দিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। এক ম্যাচ হাতে রেখে জিতে নিল শিরোপা। লিগের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত নিজেদের গায়ে পরাজয়ের আঁচড় লাগতে দেয়নি আবাহনী।
দল বদল থেকে শুরু করে শিরোপা জেতা পর্যন্ত এই দীর্ঘ পথ চলায় একেবারে ফেভারিটের মত খেলে শিরোপা উৎসব সারল আবাহনী।
আজ সোমবার সুপার ফোর পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে ফেন্ডস ক্লাবকে ৪৩ রানে হারিয়ে শিরোপা উৎসবে মাতে আবাহনী।
দলের ক্রিকেট চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর আবাহনীকে দ্বিতীয় শিরোপা এনে দিলেন গওহর সিরাজ জামিল। ২০১৭ সালের পর দ্বিতীয় শিরোপা জিতল আবাহনী। আবাহনী যে সত্যিকারের বড় দল সেটা মাঠেই দেখিয়ে দিল আবাহনী। এখন শেষ ম্যাচটি জিতে নিজেদের অজেয় থাকার রেকর্ড ধরে রাখতে চাইবে আবাহনী।
এক ম্যাচ হাতে রেখে শিরোপা নিশ্চিত করায় এখন দুইবার শিরোপা উৎসব করার সুযোগ পেল আবাহনী। লিগের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটে বলে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে আবাহনী।
আর মাঠে হাজির থেকে দলের প্রাণভোমরা হয়ে ক্রিকেটারদের প্রেরণা যুগিয়েছেন ক্লাবের ক্রিকেট চেয়ারম্যান গওহর সিরাজ জামিল। এখন শেষ ম্যাচটি জিতে উৎসব করতে চান জামিল।
সোমবার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সুপার ফোর পর্বের তৃতীয় খেলায় টসে হেরে ব্যাট করতে নামা চট্টগ্রাম আবাহনী নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭৮ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় ফ্রেন্ডস ক্লাবের সামনে।
শুরু থেকেই আবাহনীর ব্যাটাররা দৃঢ়তার পরিচয় দেন। দুই ওপেনার ৩৩ রান তুলে বিচ্ছিন্ন হন। ওমর হাসান ২৩ রান করে বিদায় নিলেও অপর ওপেনার সাইদুল হাসান সানজু তিন নম্বরে খেলতে নামা মো. শোয়েবের সাথে জুটি বেঁধে রান সংখ্যা ১০৫ এ নিয়ে যান যান।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৬২ রান যোগ করেন তারা। শোয়েব ১৯ রান করে ফিরে গেলে কিছু পরে ওপেনার সাইদুলও বিদায় হন। তিনি ২ রানের জন্য নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করতে পারেননি।
এরপরের ব্যাটারদের মধ্যে জাহিদ জাবেদ ১৮ রান করে আউট হলে দলীয় রানসংখ্যা ১৪০ এ উন্নীত হয়। ৫ম উইকেট জুটিতে সাইদুল ইসলাম ইমরান এবং ফজলে রাব্বী ৫৪ রান সংগ্রহ করে রান সংখ্যা দু’শতের কাছাকাছি নিয়ে যান। ১৯৪ রানের মাথায় আউট হন ফজলে রাব্বী ব্যক্তিগত ২৫ রান করে।
এরপর জুটি গড়েন সাইদুল এবং অধিনায়ক আবু বক্কর জীবন। এ জুটি ৩২ রান সংগ্রহ করলে নিজস্ব ৩৮ রানে সাইদুল আউট হয়ে যান। অধিনায়ক জীবন শুরু থেকে মারমুখী খেলতে থাকেন। মাত্র ২৬ বল খেলে ৬৬ রান সংগ্রহ করে তিনি অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার এবং ৫টি ছক্কার মার।
তার অর্ধশতাধিক রানের ইনিংসে আবাহনীর রান সংখ্যা ২৭৮ এ পৌঁছে। অতিরিক্ত রান আসে ৩৬। ফ্রেন্ডস ক্লাবের নূর আলম সাদ্দাম, হিমেল নন্দী ২টি করে উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট পান শাওন কাজী সুমন এবং আসাদুজ্জামান।
২৭৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ফ্রেন্ডস ক্লাব শুরুতেই উইকেট হারায়। আলিফ হোসেন রান আউটের শিকার হন। এরপরের দুই ব্যাটারও রান পাননি। ওপেনার উদয় ভুইয়া একদিক ধরে খেলেন।
ব্যক্তিগত ৭১ রান করে জীবনের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। দলের রান এ সময় ৪ উইকেটে ৯৮। ৫ম উইকেট জুটিতে আশার আলো দেখান দুই ব্যাটার শাওন কাজী সুমন এবং ইকবাল বাহার। এ জুটি ৯৩ রান সংগ্রহ করে।
কিন্তু আবারো জীবনের আক্রমণে উইকেট হারায় ফ্রেন্ডস ক্লাব। ইকবাল ২৯ রান করে আবাহনী অধিনায়ক জীবনের বলে বোল্ড হন। দলের রান দাঁড়ায় এ সময় ১৯১। ৮ রান যোগ করে ১৯৯ রানে ফিরে যান সফল ব্যাটার শাওন কাজীও।
তিনি ৭৭ রান করে বাপ্পার বলে বোল্ড হন। এরপর হিমেল নন্দী কিছুটা চেষ্টা করলেও জীবন এবং বাপ্পার বোলিং তোপে আর সুবিধা হয়নি। হিমেল ২০ রান করেন। ৪৯.২ ওভার খেলে ২৩৫ রানে অল আউট হয়ে যায় ফ্রেন্ডস ক্লাব।
ব্যাট হাতে সাফল্যের পর বল হাতেও নৈপুন্য দেখান আবাহনী অধিনায়ক আবু বক্কর জীবন। ৩৮ রান দিয়ে ৪টি উইকেট পান এ স্পিনার। অফ স্পিনার শামসুদ্দিন বাপ্পা ২৩ রান দিয়ে নেন ৩টি উইকেট। ১টি উইকেট পান তৌহিদুল হাসান। ম্যান অব দি ম্যাচ আবাহনীর আবু বক্কর জীবনের হাতে ক্রেষ্ট তুলে দেন আবাহনীর ক্রিকেট চেয়ারম্যান গওহর সিরাজ জামিল।