এক ম্যাচ পর জয়ের ধারায় ফিরল মোহামেডান

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ২২ মার্চ, ২০২৫ at ৯:৪২ পূর্বাহ্ণ

দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেও দলকে জেতাতে পারলেননা ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। উল্টো এক ম্যাচ পর আবার জয়ের ধারায় ফিরল মোহামেডান। বড় পুঁজি না পেলেও দারুণ এক জয় পায় তামিম ইকবালের মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। মিরপুর শেরই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লড়াইটটা ছিল যেন সোহান বনাম মোহামেডান। ২১৭ রানের পুঁজি নিয়েও দারুণ বোলিংয়ে জয়ের পথ দ্রুতই তৈরি করে নেয় তারা। কিন্তু প্রবল প্রতিরোধে বাধা হয়ে দাঁড়ান সোহান। বলতে গেলে একার লড়াইয়ে জিইয়ে রাখেন ধানমন্ডির জয়ের আশা। ৯২ বলে সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েই শেষ পর্যন্ত ২৩ রানের জয় পায় মোহামেডান। সাত ম্যাচে মোহামেডানের এটি পঞ্চম জয়। সমান ম্যাচে ধানমন্ডির জয় তিনটি। মিরপুরে মেঘাচ্ছন্ন গুমোট দিনে দুই দলের বোলাররাই পেয়েছেন বাড়তি সুবিধা। ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ কন্ডিশন ছিল বেশ কঠিন। বিশেষ করে সকালে বোলারদের জন্য সহায়তা ছিল যথেষ্টই।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে রানের জন্য ভুগতে হয় তামিম ইকবাল ও রনি তালুকদারকে। তবে পিচের আচরণ বুঝে উইকেট ধরে রাখায় মন দেন দুজনই। দল তাতে পায় মোটামুটি ভালো ভিত। প্রথম ১০ ওভারে কেবল ৩১ রান এলেও উইকেট পড়েনি। তবে মাসুম খান টুটুল এক পর্যাঁয়ে আঁটসাঁট বোলিং করে আটকে রাখেন দুই ব্যাটসম্যানকে। ধৈর্য হারিয়ে সানজামুল ইসলামকে রিভার্স সুইপ খেলে ক্যাচ দেন তামিম। ২৬ রান করতে তিনি খেলেন ৫৩ বল। আরেক ওপেনার রনির ব্যাট থেকে আসে ৬৪ বলে ৩৯ রান। তিন নম্বরে মাহিদুলও রানের চাকায় হাওয়া দিতে পারেননি। ৪৪ রান করতে তিনি খেলেন ৭৭ বল। দ্রুত রান তোলার তাগিদেই হয়তো সাইফ উদ্দিনকে চার নম্বরে নামায় মোহামেডান। লাভ হয়নি কোনো। খালি হাতে ফেরেন সাইফ। আরও একবার হতাশ করেন মুশফিকুর রহিম। দলের বিপদের সময়ে স্লগ সুইপ খেলার লোভ সংবরণ করতে পারেননি অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ফিরেন ৬ রান করে। লিগের পাঁচ ইনিংসে কোনো ফিফটি নেই তার। ছয় নম্বরে নেমে পরিস্থিতির দাবি কিছুটা মেটাতে পারেন তাওহিদ হৃদয়। ৫ চারে ৪৭ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। এর সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজ ২৪ বলে ২৬ ও আবু হায়দারের ১৩ বলে ১৮ রানের সৌজন্যে দুইশ পেরোয় মোহামেডান।

ধানমন্ডির রান তাড়ায় শুরুতে ঝড় তোলেন হাবিবুর রহমান। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। পঞ্চম ওভারে ড্রেসিং রুমে ফেরার আগে ৩ চার ও ২ ছক্কায় মাত্র ১৬ বলে ৩১ রান করেন তিনি। চমক দিয়ে হাবিবুরের সঙ্গে সানজামুল ইসলামকে ওপেনিংয়ে নামায় ধানমন্ডি। তবে কাজে লাগেনি তা। তিন নম্বরে নামা ফজলে মাহমুদও ফেরেন দ্রুতই। চার নম্বরে নেমে একপ্রান্ত ধরে রাখেন সোহান। ইয়াসির আলি, মইন খান, জিয়াউর রহমানও হতাশ করলে ৭৯ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারায় তারা। সপ্তম উইকেটে মাসুম খানের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েন ধানমন্ডি অধিনায়ক। দুজন মিলে যোগ করেন ৩৮ রান। ১৮ রান করা মাসুমের বিদায়ের পর দলের পুরো দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নেন সোহান। তখনও জয় থেকে একশ রান দূরে ধানমন্ডি আর সোহান অপরাজিত ৪৩ রানে। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৫৫ বলে ফিফটি করেন তিনি। পরে লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। তবে কাউকে লম্বা সময় সঙ্গী পাননি। শেষ ব্যাটসম্যান ক্রিজে যাওয়ার পর নিজের করণীয় বুঝে নেন সোহান। ৮৮ থেকে সাইফের টানা দুই বলে কাভারের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে পৌঁছে যান শতরানে। তার লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ও এবারের লিগে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি এটি। বাকি পথটুকুর জন্যও বড় শটকেই বেছে নিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু টানা তৃতীয় ছক্কা আর হয়নি। সীমানায় তার ক্যাচ নেন হৃদয়, বাঁধনহারা উল্লাসে মেতে ওঠেন বোলার সাইফ ও সতীর্থরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটানা ৬ জয়ে শীর্ষে আবাহনী
পরবর্তী নিবন্ধআইপিএলের ১৮তম আসর শুরু হচ্ছে আজ