নারী ও শিশু ট্রাইবুন্যালে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে এক নারীর করা মামলার নথিতে অন্য একটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও স্মারক নাম্বার চলে আসার ঘটনা ঘটেছে। এতে শিশুসহ তিনজনকে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এর আগে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই নারীর করা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যুপূর্বক আদালতে হাজির করা হয়। গতকাল নারী ও শিশু ট্রাইবুন্যাল-১ বিচারক মো. মশিউর রহমান খানের আদালতে আনোয়ারা থানার একটি মামলায় (নং-১৯২/২০ইং) এ ঘটনা ঘটে। পরে নথি পর্যালোচনা করে আদালতে ভুলটি ধরা পড়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে জারি করা ওয়ারেন্ট আদেশ বাতিলের পাশাপাশি তাদের মুক্তি দেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল-১ এর বেঞ্চ সহকারী মো. জসিম উদ্দিন। গত ১৪ জুলাই আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের সাইমা সুলতানা সাকি যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে তার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদ ও দেবরের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
পরে আদালত অভিযোগের বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য সমবায় কর্মকর্তা আনোয়ারাকে নির্দেশ দেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর একটি অনুসন্ধান প্রতিবেদন ওই মামলার নথিতে অন্তুর্ভুক্ত হয়। সাকির মামলার নথির সাথে থাকা তদন্ত প্রতিবেদন আদালত পর্যালোচনা করে দেখেন প্রতিবেদনটি নারী ও শিশুর আরেকটি মামলার (নং-১৫৫/২০ ইং) প্রতিবেদন। ওই অনুসন্ধান প্রতিবেদনের স্মারক নাম্বারের(১৯২/২০ইং) সাথে সাকির করা মামলা নাম্বারের (নং-১৯২/২০ ইং) মিল পাওয়া যায়।
তবে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে অভিযোগকারিনী ও আসামিদের নাম উল্লেখ ছিল না। আদালত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে অসাবধানতাবশত অনুসন্ধান প্রতিবেদনের সূত্রের স্মারক নাম্বারকে মামলার নাম্বার মনে করে তার ভিত্তিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সাকির মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করেন। এই পরোয়ানা মূলে পাঁচ আসামির মধ্যে মো. মোরশেদ, জাকের হোসেন ও খুরশিদা বেগমকে গ্রেপ্তার করে গতকাল নারী ও শিশু ট্রাইবুন্যাল-১ হাজির করা হয়।
আদালত বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে অনুসন্ধান প্রতিবেদনটি সাইমা সুলতানা সাকির করা মামলাটির নয়। সাকির করা মামলাটির অনুসন্ধান প্রতিবেদন এখনো জমা হয়নি। এতে আদালত গত ২৯ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে করা ওয়ারেন্ট আদেশ রদ করে আসামিদের মুক্তি দিয়েছেন। গতকাল নির্ধারিত দিনে আদালতে আসামিদের হাজির করে আনোয়ারা পুলিশ। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, আগের দিন রাতে আনোয়ারা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে রাতভর থানায় রাখেন। এছাড়া এ মামলায় মোরশেদ নামে এক শিশুকে আসামি দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছিল। অথচ সাকির করা যৌতুকের নির্যাতনের মামলায় মোরশেদ নামে ২ নম্বর আসামির বয়স দেখানো হয়েছে ১৮ বছর। গতকাল মোরশেদ নামে যাকে আসামি দেখিয়ে আদালতে আনা হয়েছে সে এবার জেএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।