রাউজানে প্রবাসীর বাড়িতে দুর্র্ধর্ষ ডাকাতিতে জড়িত এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীসহ ৮ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। এসময় লুণ্ঠিত ৪৬ ভরি স্বর্ণালংকার, কয়েন ও ডাকাতি হওয়া স্বর্ণের বিক্রয়লব্দ ৩০ লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবসার বলেছেন, রাউজান সুলতানপাড়া হাজী মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বাড়ির প্রবাসী মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর পুত্র মোহাম্মদ সরোয়ার চৌধুরী (৩৫) গত ২৭ অক্টোবর দুবাই থেকে দেশে আসেন। ২৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে তিনি তার মামাতো বোনের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষে পরিবারের লোকজনসহ মামার বাড়িতে যান। এ সময় ঘরে তার বৃদ্ধ বাবা ছাড়া আর কোনো মানুষ ছিল না। এই সুযোগে গভীর রাতে একদল ডাকাত সরোয়ার চৌধুরীর পাকা ঘরের পেছনে জানালার গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে।
ডাকাতরা তার বাবাকে কম্বল দিয়ে চেপে ধরে চোখ-মুখ ও হাত-পা বেঁধে গলায় চাকু ধরে আলমারির চাবি নিয়ে নেয়। ডাকাত দলের সদস্যরা আলমারিতে রক্ষিত সরোয়ারের স্ত্রী, মা, বোন ও অপরাপর আত্মীয়-স্বজনের আমানত হিসেবে রাখা অলংকারসহ সর্বমোট ৭০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে। ডাকাত দল ঘরে রাখা নগদ ৫ লাখ টাকা, উন্নতমানের ৫টি মোবাইল সেট এবং একটি স্যামসাং ব্রান্ডের ট্যাব লুট করে।
র্যাব জানায়, গত ৯ নভেম্বর সরোয়ার চৌধুরী বাদী হয়ে উক্ত ডাকাতির ঘটনায় রাউজান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে র্যাব তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিশেষ সংবাদের ভিত্তিতে গত ২১ নভেম্বর বিকেলে র্যাবের একটি আভিযানিক দল রাউজান দক্ষিণ গহিরা শিবের ঘাট এলাকার একটি বাসা থেকে আসামি মুসাকে গ্রেপ্তার করে এবং তার হেফাজত থেকে ডাকাতি হওয়া নগদ ৫ লাখ টাকা এবং স্বর্ণালংকার বিক্রয়ের ১ লাখ ৯৯ হাজার টাকাসহ ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা উদ্ধার করে।
মুসার দেয়া তথ্য মতে ডাকাত দলের সদস্য সাইদুল ইসলাম প্রকাশ সাইফুলকে একই দিনে গহিরার উত্তর-পূর্ব কোতোয়ালী ঘোনা দলইনগরস্থ একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যমতে রাউজান ও হাটহাজারী থানা এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ডাকাত দলের অন্য সদস্য খোরশেদুল আলম (২৮), সাজ্জাদ হোসেন (২৭), বাপ্পি (২৬), সজল শীল (২৭), ইদ্রিস প্রকাশ কাজলকে (৩৪) গ্রেপ্তার করা হয় এবং ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত গ্রিল কার্টার, ছোরা, টর্চ লাইটসহ ডাকাতি হওয়া ৪৬ ভরি স্বর্ণালংকার ও কয়েন এবং স্বর্ণের বিক্রয়লব্দ মোট ৩০ লাখ ১ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করে।
র্যাব ডাকাতির মালামাল ক্রেতা বিপ্লব চন্দ্র সাহাকেও (৩৮) তার জুয়েলার্সের দোকান থেকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেপ্তার আসামিরা উল্লিখিত ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।