চট্টগ্রাম কাস্টমসে এক বছর পর অনুষ্ঠিত ই–অকশনে (অনলাইন নিলাম) সাড়া মেলেনি। গতকাল সম্পন্ন হওয়া নিলামে ২৩ লটের মধ্যে ২০টিতে দরপত্র জমা পড়ে ৪৯টি। মাত্র ১২ জন বিডার (নিলামে অংশগ্রহণকারী) মিলে এসব দরপত্র জমা করেন। নিলামে অনলাইনে দরপত্র জমা দেয়ার সময়সীমা ছিল গত ২৩ আগস্ট সকাল থেকে গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত। কাস্টমসের কর্মকর্তারা বলছেন, অনলাইনে নিলামে এখনো অনেক বিডার অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেনি। তাই অংশগ্রহণকারী বিডারের সংখ্যা কম ছিল।
নিলামে তোলা ২৩ লট পণ্যের মধ্যে ছিল–৮২৬ পিস খালি এলপিজি সিলিন্ডার, ১৮৭ কার্টন ইলাস্টিক ব্যান্ড, ১১ হাজার ৮৯০ পিস প্লাস্টিক শিট, ১০ প্যাকেট গ্লাস বিডস, ৪৪০ কেজি থিয়ানশি লিপিড মেটাবলিক টি, ২১৭ কেজি রেজুভেনাশন ক্যাপসুল, ৬৬ কেজি গ্র্যাপ এক্সাক্ট্র ক্যাপসুল, ৬০৪ রোল ফেব্রিক্স, ১১ রোল ফ্লিচ ফেব্রিক্স, ৪৩ কার্টন প্লাস্টিক হ্যাংগার, ১১ হাজার ১১০ পিস টপ হ্যাংগার, ১ হাজার ১০ কেজি কটন ড্রকর্ড, ৯৮ রোল কটন ফেব্রিক্স, ১২০ রোল ওভেন ফেব্রিক্স, ১০২ জোড়া জুতা, ৮০ রোল গাম টেপ, ৬৬ হাজার ১৮০ পিস মেনস পোলো টি শার্ট, ১৫ হাজার ৮৯৪ পিস স্টোন টাইলস, ২৪৮ পিস নতুন ক্যাপিটাল মেশিনারি, ২ হাজার ৩০৪ পিস প্লাস্টিক ব্লক, ২২৭ বঙ মেনস পোলার ফ্লিচ জ্যাকেট, ১৭ হাজার ১৯০ পিস মেনস শর্ট।
চট্টগ্রাম নিলাম শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা ও অনলাইন নিলামের সুপারভাইজার তুহিন চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, অনলাইনে দরপত্র জমা দেয়ার সময়সীমা শেষ হয়েছে। এখন নিলাম কমিটি নিলামের আইন মেনে সর্বোচ্চ দরদাতার অনুকূলে বিক্রয় অনুমোদন দেয়া হবে।
কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, এর আগে ২০২০ সালের ২৭ ও ২৮ অক্টোবর ১৬ লট বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিলামে তোলার মাধ্যমে ই–অকশনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৯ ও ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ২০ লট পেঁয়াজ নিলামে তোলা হয়। এছাড়া একই বছরের ৩ ও ৪ নভেম্বর কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১১২ লট গাড়ি তোলা হয়। দ্বিতীয় দফায় ১২ ও ১৩ জুন কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা ১০৮টি গাড়ি পুনরায় নিলামে তুলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সর্বশেষ গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ৭৮ লট কার্নেট গাড়ি নিলামে তোলা হয়।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টমস। নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। সর্বমোট ৪৫ দিনের মধ্যে নিলামে তোলার এই নিয়ম দীর্ঘদিন ধরে কার্যকর করতে পারেনি বন্দর ও কাস্টমস। এতে করে বন্দরের ইয়ার্ডে এসব কন্টেনার পড়ে থাকে। আমদানি পণ্য যথাসময়ে খালাস না নেয়ায় বন্দরগুলোতে প্রায়ই কন্টেনার জট লাগে। দিনের পর দিন কন্টেনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষও চার্জ পায় না।