এক ধাক্কাতেই গচ্চা ১২ কোটি টাকা

বার্থিংয়ের সময় গ্যান্ট্রিক্রেন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে কাল বন্দর ত্যাগ করছে জাহাজটি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩ নভেম্বর, ২০২২ at ৫:২৬ পূর্বাহ্ণ

এক ধাক্কাতেই প্রায় ১২ কোটি টাকা গচ্চা দেয়া বিদেশি কন্টেনার জাহাজটি অবশেষে আগামীকাল চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করছে। টানা ৩৬ দিন চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অলস বসে থাকা জাহাজটি বন্দরের ক্ষতিপূরণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৭শ’ টিইইউএস কলম্বোগামী রপ্তানি কন্টেনার জাহাজটিতে বোঝাই করা হচ্ছে।
সূত্র জানিয়েছে, ইউরোপের বিশ্বখ্যাত জার্মানভিত্তিক শিপিং কোম্পানি হ্যাপাগ-লয়েড দীর্ঘদিন যাবত চট্টগ্রাম বন্দরে ব্যবসা করলেও তাদের কোন জাহাজ ছিল না। শুধুমাত্র কন্টেনার বঙ অপারেট করতো তারা। দীর্ঘদিন পর চট্টগ্রাম-কলম্বো রুটে জাহাজ পরিচালনার উদ্যোগ নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে জাহাজ চলাচল শুরু করেছিল হ্যাপাগ-লয়েড। গত ২৭ সেপ্টেম্বর তাদের প্রথম জাহাজ এমভি হানসা রেন্সডবার ১ হাজার ৭শ’ টিইইউএস কন্টেনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। পরদিন জাহাজটি বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনালে বার্থিং করার সময় গ্যান্ট্রিক্রেনে ধাক্কা দেয়। এতে চট্টগ্রাম বন্দরের গ্যান্ট্রিক্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজটিকে আটক করে। জাহাজটিতে আসা আমদানি পণ্য ভর্তি এবং এমটি কন্টেনার খালাস করার পর সেটিকে বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ফেরার পথে জাহাজটি ১ হাজার ৪শ’ টিইইউএস রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার নিয়ে কলম্বো যাওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। বন্দরের ক্ষতিপূরণ নিয়ে টানাপোড়নে আটকে পড়া বিদেশি জাহাজটি বহির্নোঙরে অলস বসে থাকে। জাহাজটির ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত থেকে সম্প্রতি ওই জাহাজের মালিককে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে ৩ কোটি ৬২ লাখ ৭৩ হাজার ৭২০ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশে জাহাজ মালিক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ক্ষতিপূরণ প্রদান করার পর গত মঙ্গলবার জাহাজটি অবমুক্ত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিলেও হ্যাপাগ লয়েডের ভাড়ায় আনা লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী এমভি হানসা রেন্সডবার জাহাজটির জন্য প্রতিদিন ভাড়া গুনতে হয়েছে ২০ হাজার ডলার। চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অলস বসে থাকলেও ইতোমধ্যে জাহাজটির জন্য ৮ কোটি টাকারও বেশি ভাড়া গুনতে হয়েছে। সাথে ফিঙড অপারেটিং কস্ট বা এফওসি হিসেবেও খরচ হয়েছে বিপুল পরিমান অর্থ। সবকিছু মিলে প্রায় ১২ কোটি টাকা গচ্ছা দেয়ার পর জাহাজটি অবমুক্ত হয়ে গতকাল বন্দরের সিসিটি-৩ নম্বর বার্থে নোঙর করেছে। জাহাজটিতে কোন আমদানি পণ্য না থাকায় বন্দরে বার্থিং নেয়ার পরপরই শুরু হয়েছে রপ্তানি পণ্য বোঝাই। জাহাজটি ৭’ টিইইউএস-এর মতো রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার নিয়ে আগামীকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করবে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদ উদ্দীন আহমেদ গতকাল জাহাজটি বন্দরে বার্থিং নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করতে পারবে। এটির বন্দর ত্যাগে আর কোন বাঁধা নেই বলেও তিনি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রস্তুতিসভায় যুবলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ
পরবর্তী নিবন্ধআবারও হৃদয়ভাঙা হার