এক দশক পর স্থায়ী ক্যাম্পাস পাচ্ছে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ

একনেকে অনুমোদন

রাঙামাটি প্রতিনিধি | সোমবার , ২৪ মার্চ, ২০২৫ at ৬:০১ পূর্বাহ্ণ

প্রতিষ্ঠার এক দশক পর অবশেষে স্থায়ী ক্যাম্পাস পাচ্ছে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ (রাঙামেক)। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পসহ ১৫টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার। গতকাল রোববার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুমোদিত ১৫টি প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ১৩৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়নের পরিমাণ ১৪ হাজার ১৯৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ৬ হাজার ৫৩৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নের পরিমাণ ৪০৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রসারে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ (রাঙামেক)। প্রতিষ্ঠা পরবর্তী সময়ে ২০১৪১৫ শিক্ষাবর্ষে অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে প্রথম পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিট ভবনে। শিক্ষা কার্যক্রম চালুর পর এক দশকের মধ্যেও স্থায়ী ক্যাম্পাস পায়নি প্রতিষ্ঠানটি। রাঙামাটি জেলা শহরের রাঙাপানি এলাকায় প্রায় ২৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হলেও প্রকল্প পাস না হওয়ায় থমকে ছিল স্থায়ী ক্যাম্পাসের প্রতিষ্ঠার কাজ। এ নিয়ে ২০১৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলন করেছে কলেজের শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বরেও আন্দোলনে নেমেছিল শিক্ষার্থীরা। অবশেষে একনেক সভায় প্রকল্প পাস হওয়ায় শিগগিরই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের (রাঙামেক) অধ্যক্ষ ডা. প্রীতিপ্রসূণ বড়ুয়া বলেন, ‘আজকের (গতকাল রোববার) একনেক সভায় রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ স্থাপন প্রকল্পসহ ১৫টি প্রকল্প পাস হয়েছে। পরবর্তীতে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নিয়োগ দেওয়া হবে। এরপর প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। আগামী ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছে।’

রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের চতুর্থ ব্যাচ ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী ডা. দীপ্ত দাশ তীর্থ বলেন, ‘রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক সংকট কখনই ছিল না। একাডেমিক ফলাফলের দিক দিয়েও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন অন্যান্য মেডিকেলের তুলনায় অনেক ভালো। কিন্তু আমাদের শ্রেণিকক্ষ সংকট ছিল। ক্যাডাভার রাখার কক্ষে ফর্মালিনের গন্ধ সহ্য করে প্রথম বর্ষে অনেক ক্লাস করেছি। এরপর রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে প্রথম আন্দোলন শুরু হয় ৪র্থ ব্যাচের হাত ধরে ২০১৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। তখন ক্লাসপরীক্ষা বর্জনের ফলে মেডিকেলের অস্থায়ী ভবনের ঊর্ধ্বমুখীব্যাপ্তি বাড়িয়ে ৪টি শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থা করে সাময়িকভাবে শ্রেণিকক্ষ সংকট দূর করা হয়। ইন্টার্ন শিপের ক্ষেত্রেও রোগ ও রোগীর কোনো অভাববোধ হয়নি। অভাব ছিল একটাই স্থায়ী ক্যাম্পাস। অবশেষে স্থায়ী ক্যাম্পাসের প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন হয়েছে। এই খবরে প্রাক্তন ও বর্তমান সকল শিক্ষার্থী খুবই আনন্দিত। আমরা হয়ত স্থায়ী ক্যাম্পাস পাইনি, কিন্তু রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ আমার পরিচয় আমার গর্ব।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধমধুবনের ইফতার স্বাদ ও মানে অনন্য
পরবর্তী নিবন্ধচীনে প্রধান উপদেষ্টার সফর হবে মাইলফলক : রাষ্ট্রদূত