এক দশকে সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন

পার্বত্য চট্টগ্রাম

বিজয় ধর, রাঙামাটি | শনিবার , ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৯:৪২ পূর্বাহ্ণ

পাহাড়ে দৃষ্টিনন্দন সড়ক ও সেতু নির্মাণের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার যেমন উন্নত হয়েছে পাশাপাশি পরিবর্তন এসেছে এখানকার পর্যটন, কৃষি ক্ষেত্রেও। সবুজের মাঝে আঁকাবাঁকা দৃষ্টিনন্দন সড়ক পাল্টে দিয়েছে পাহাড়ি জীবন। গত এক দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগে এসেছে এ বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

রাঙামাটি পার্বত্য জেলার সাথে ঢাকা, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য জেলা এবং রাঙামাটি জেলা সদরের সাথে বিভিন্ন উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা এবং তা উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে রাঙামাটি সড়ক বিভাগ। তারা জানিয়েছে, নির্ধারিত সড়ক তৈরী, সড়ক ব্যবস্থাপনাই হলো সড়ক বিভাগের মূল কাজ। আমাদের রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য তিন জেলার বিভিন্ন উপজেলার অধীন জাতীয়, আঞ্চলিক, পিডার সড়ক সমেত প্রায় ২৩৫ কিমি সড়ক রয়েছে।

রাঙামাটি সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বগাছড়িনানিয়ারচরলংগদু সড়কের ১০ কিমি এ নানিয়ারচরের চেঙ্গী নদীর উপর ৫শ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মিত হয়েছে। এই সেতুটির নতুন নামকরণ করা হয়েছে চুনীলাল দেওয়ান সেতু। সেতুর মোট ব্যয় ২২৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। দীর্ঘ ৬০ বছর পর নানিয়ারচরে এই সেতু নির্মাণের ফলে এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসহ এখানকার কৃষিপণ্য ক্রয়বিক্রয় সহজলভ্য হবে। এতে নানিয়ারচরের কৃষক লাভবান হবে। এই সেতুর মাধ্যমে অল্প সময়ে রাঙামাটির লংগদু, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা হয়ে বাঘাইছড়ির সাজেকে পৌঁছানো যাবে। এরই মধ্যে সেতুটি ভ্রমণপিাপাসু মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রাঙামাটি জেলা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকরা সেতুর পাশের অপরূপ দৃশ্য দেখতে ভিড় করেন প্রতিদিন। ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর সেতুর নির্মাণ শুরু হয়।

রাজস্থলীর ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরা বলেন, সীমান্ত সড়ক হওায়ার কারণে দুর্গম এলাকার জনগণ বর্তমানে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিসপত্র রাজস্থলী সদরে এনে বিক্রি করতে পারছে। শুধু রাজস্থলী উপজেলা নয় জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি উপজেলার মানুষও এ সড়কের ফলে উপকৃত হবে। ভবিষ্যতে এই সড়ক পর্যটনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সীমান্ত সড়ক নির্মাণের ফলে স্থানীয়রা যেমন আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছেন তেমনি বর্তমান সরকারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন তারা।

চট্টগ্রামরাঙামাটি মোটর মালিক সমিতির রাঙামাটি অঞ্চলের সভপতি মো. শহীদুজ্জামান মহসিন রোমান বলেন, বর্তমানে সরকারের ১৫ বছরের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন উপজেলার সড়কগুলোতে যথেষ্ট উন্নয়ন করা হয়েছে। রাঙামাটিচট্টগ্রাম সড়কের বাস ড্রাইভার মো. ইউছুপ বলেন, বিগত ১০ বছর আগে রাঙামাটিচট্টগ্রাম সড়ক অনেক ছোট ছিল। এই সড়কে গাড়ি চালানো অনেক কষ্টসাধ্য এবং সময়সাপেক্ষ ছিল।

রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, নিরাপদ, যুগোপযোগী ও টেকসই মহাসড়ক বিনির্মাণে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মাধ্যমে যে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে সেটা অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা জনগণের অর্থনৈতিক, আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅদম্য প্রদীপের প্রতিবন্ধিতা জয়
পরবর্তী নিবন্ধপুত্র সন্তানের শখে পাঁচ মাসের শিশুকে অপহরণ