একুশে পদক নিলেন এম এ মালেক

গ্রহণ করলেন চট্টগ্রামের আরো দুই বিশিষ্টজন

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেশের ২৪ বিশিষ্ট নাগরিককে একুশে পদক প্রদান করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ৩ জনসহ ২৪ বিশিষ্টজনের হাতে পদক তুলে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
সাংবাদিকতায় দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক ছাড়াও চট্টগ্রামের অপর দুজন হচ্ছেন সমাজসেবায় সংঘরাজ ড. জ্ঞানশ্রী মহাথের এবং শিক্ষায় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ভিসি অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পদক হস্তান্তর করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। পদক হস্তান্তর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে নিজে উপস্থিত থাকতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদকপ্রাপ্ত গুণীজনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পরবর্তী কোনো সময়ে দেখা হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধে অবদান, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদান রাখা ব্যক্তি, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে। নীতিমালা অনুযায়ী, নির্বাচিত প্রত্যেককে এককালীন নগদ ৪ লাখ টাকাসহ ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।
২০২২ সালের একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণীজনরা হলেন ভাষা আন্দোলনে মোস্তফা এম এ মতিন (মরণোত্তর) ও মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল (মরণোত্তর)। মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (মরণোত্তর), কিউ এ বি এম রহমান ও আমজাদ আলী খন্দকার। সাংবাদিকতায় এম এ মালেক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মো. আনোয়ার হোসেন। শিক্ষায় অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ। সমাজসেবায় এস এম অব্রাহাম লিংকন ও সংঘরাজ জ্ঞানশ্রী মহাথের।
শিল্পকলা (নৃত্য) বিভাগে জিনাত বরকতউল্লাহ, শিল্পকলা (সঙ্গীত) বিভাগে নজরুল ইসলাম বাবু (মরণোত্তর), ইকবাল আহমেদ ও মাহমুদুর রহমান বেণু। অভিনয়ে খালেদ মাহমুদ খান (মরণোত্তর), আফজাল হোসেন ও মাসুম আজিজ। ভাষা ও সাহিত্যে কবি কামাল চৌধুরী ও ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ। গবেষণায় ড. মো. আবদুস সাত্তার মণ্ডল, ড. মো. এনামুল হক, ড. সাহানাজ সুলতানা ও ড. জান্নাতুল ফেরদৌস।
দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেককে পদক প্রদানকালে বলা হয়, দেশের প্রবীণ সম্পাদক এম এ মালেক সাংবাদিকতায় অনন্য অবদান রেখেছেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক আজাদীর সাথে যুক্ত আছেন ১৯৬০ সাল থেকে। শুরু থেকে পরিচালনা সম্পাদক হিসেবে কাজ করলেও মহান মুক্তিযুদ্ধের সংকটকালে তিনি দৈনিক আজাদীর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময় তিনি জনমত সৃষ্টিতে সাহসী, অনন্য ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছেন।
উল্লেখ্য, দৈনিক আজাদী পত্রিকার সাবেক সম্পাদক, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদের মৃত্যুর পর এম এ মালেক আজাদীর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সংবাদপত্র শিল্পের অগ্রগতি ও আধুনিকায়নে তাঁর অবদান অসামান্য। তিনি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। গত আট বছর ধরে তিনি সাংবাদিকদের মধ্যে সর্বোচ্চ করদাতা। সামাজিক কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ক্যান্সার হাসপাতাল বাস্তবায়ন পরিষদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি চিকিৎসাসেবা, অন্ধত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র বিমোচন এবং শিক্ষার প্রসারে ভূমিকা রেখে চলেছেন। সাংবাদিকতায় গৌরবজনক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এম এ মালেককে ২০২২ সালের একুশে পদকে ভূষিত করা হলো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্কুল-কলেজ খুলছে কাল
পরবর্তী নিবন্ধআমার অহংকারের একুশ