ফেব্রুয়ারি মাস আসলেই মনটা কেমন ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে। চারিদিকে কেবল কষ্টের সুর প্রবাহিত হয়।ভাই হারানোর ব্যথা বাজে হৃদয়ে হৃদয়ে। তবে চারিদিকে বসন্তের আগমনে ও রঙিন ফুলের সমারোহে মনটা কেমন ভরে ওঠে। পলাশ, গাঁদা, ডালিয়া আরো হরেক রকম ফুলে ভরে থাকে বাগান। লাল পলাশ ঝরে মাঠ লাল গালিচা পেতেছে মনে হয়। এরই মাঝে থাকে বসন্ত উৎসব, পিঠা পুলির আয়োজন, আর ভালোবাসা দিবস। এমন শোকের মাসে বার বার বাঙালিরা বুঝিয়ে দেয় বাঙালিরা ই পারে সব দুঃখ, কষ্ট, শোক ভুলে নতুন কে গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে। সন্তান হারা মায়েরা নানা রকম আয়োজন করে খাওয়ায় বীর বাঙালির তরুণদের।
এই মাসেই বীর শহীদদের মনে করিয়ে দেয় প্রতিটি কর্মে।শুরু হয় বই মেলা।মাস ব্যাপী ঢাকা,চট্টগ্রাম আরো অনেক জায়গায় শুরু হয় এই বই মেলা।এই বই মেলায় থাকে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বই। শহীদদের গল্প,যারা যুদ্ধ করেছেন তাদেরও আত্মজীবনী । নতুন নতুন লেখকদের সান্নিধ্য ও তাদের লেখা বিভিন্ন ধরনের বই।
এই অমর একুশে বই মেলা হয় সকল বাঙালির মিলন মেলা। শুধু বই মেলায় বই কেনা বেচা হয় না, পাশাপাশি থাকে সংস্কৃতির শুদ্ধ চর্চা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন গুণী কবি,লেখকদের সান্নিধ্য, সম্মাননা ও আলোচনা অনুষ্ঠান। তাদের মুখ থেকে শোনা যায় যুদ্ধের ভয়াবহ ঘটনা। লেখার বিষয় বস্তু।
এই অমর একুশে হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস পালন। প্রভাতফেরির মধ্যে দিয়ে শুরু হয় একুশে ফেব্রুয়ারির এই দিনটা। সারাদিন ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সব স্কুল, কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই শহীদ দিবস পালন করে ভাবগাম্ভীযের্র সাথে শহীদদের স্মরণ করে, পুষ্প নিবেদন করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এই ফেব্রুয়ারি মাস সত্যিই বাঙালিদের জন্য এক অনন্য অবদান ও অসাধারণ প্রাপ্তির মাস। নিজের মায়ের ভাষায় কথা বলার মতো এত আনন্দ ও ভালোলাগা আর কোথাও পাওয়া যায় না।এই ফেব্রুয়ারী মাসে বাংলা ভাষার প্রতি সবার ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ুক এই কামনা।