২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস আজ থেকে শুরু হচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় অনলাইনে ক্লাস গ্রহণের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি। সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে আজ থেকে অনলাইনে ক্লাস শুরুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কলেজগুলোকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ডগুলো।
এদিকে, একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু উপলক্ষে অনলাইনে একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে আজ। সকাল দশটায় এক অনলাইন অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি একাদশ শ্রেণির ক্লাসের উদ্বোধন করবেন। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল হক। ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ নেহাল আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রতিটি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, কলেজ পরিদর্শক ছাড়াও সারাদেশের নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক কলেজের অধ্যক্ষগণ অংশ নেবেন। এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন ৬টি কলেজের অধ্যক্ষ জুমের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হবেন।
অন্যদিকে, অনলাইনে কোন পদ্ধতিতে ক্লাস নেয়া হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি নির্দেশনায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্দেশনা দিলেও শিক্ষার্থীদের যুক্ত করে অনলাইনে ক্লাস গ্রহণে এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয় অধিকাংশ কলেজ। কেবল মহানগরের হাতেগোনা কয়েকটি কলেজ জুম প্লাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যুক্ত করে অনলাইনে ক্লাস গ্রহণের প্রস্তুতি নিয়েছে। বাকি কলেজগুলো শিক্ষকের ক্লাস ভিডিও ধারণের মাধ্যমে তা ফেসবুকে শেয়ার দিয়েই অনলাইন ক্লাসের প্রস্তুতি সেরেছে। এক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সরাসরি যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। প্রশ্ন করার সুযোগও নেই শিক্ষার্থীদের।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ শাখার তথ্য অনুযায়ী-শিক্ষাবোর্ড অনুমোদিত ২৭০টি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি কলেজের সংখ্যা ২৩টি। আরো ৩০টি কলেজ জাতীয়করণ করা হলেও শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি আত্তীকরণ আটকে রয়েছে। ফলে এসব কলেজকে এখনো পুরোপুরি সরকারি বলা যাচ্ছেনা। এদিকে, মোট ২৭০টি কলেজের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরে কলেজের সংখ্যা ৮৫টি। এর ৮টি সরকারি। বাকি কলেজগুলো এমপিওভুক্ত ও বেসরকারি।
এসব কলেজের হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া বেশির ভাগ কলেজই ফেসবুক ও ওয়েবসাইটে ভিডিও শেয়ার করে অনলাইনে ক্লাস নেবে। যাতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ থাকছেনা। সুযোগ নেই শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করারও।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন- বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেটের স্পিডজনিত সমস্যা প্রকট। আবার ইন্টারনেট বান্ডেল ক্রয়ে সব শিক্ষার্থীর সক্ষমতা থাকেনা। এছাড়া সব শিক্ষার্থীর হাতে স্মার্টফোনও নেই। এসব সমস্যার কারণে এখনই জুম ফ্লাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছেনা।
কিছু সীমাবদ্ধতার বিষয় স্বীকার করে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক আজাদীকে বলেন, কিছু সীমাবদ্ধতা তো রয়েছেই। যার কারণে কিছু সংখ্যক কলেজ শিক্ষার্থীদের যুক্ত করে অনলাইন ক্লাস নিতে সক্ষম হলেও বেশির ভাগ কলেজ সেটি পারছেনা। অধিকাংশ কলেজই ভিডিও আপলোড করে অনলাইন ক্লাস নেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।