একাদশে ম্যানুয়ালি ভর্তির আবেদন শুরু আজ

করতে হবে লিখিত আবেদন, লাগবে না ফি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৩ অক্টোবর, ২০২০ at ৪:৪৮ পূর্বাহ্ণ

অবশেষে ম্যানুয়ালি ভর্তি প্রক্রিয়ায় কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে ভর্তির বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা। ম্যানুয়ালি ভর্তি প্রক্রিয়ায় আসন শূন্য থাকা কলেজগুলোতে আজ (১৩ অক্টোবর) থেকে আবেদন করা যাবে। আগামী ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ রাখা হয়েছে। আসন শূন্য থাকার পাশাপাশি কলেজের নির্ধারিত ন্যূনতম জিপিএ থাকা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট কলেজে হাতে লেখা আবেদন জমা দিতে হবে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে। আবেদনের সাথে এসএসসি পাসের মূল ট্রান্সক্রিপ্টের ফটোকপি অবশ্যই জমা দিতে হবে। আর আবেদনের ক্ষেত্রে কোনো ফি দিতে হবে না এবার। এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক আজাদীকে বলেন, ভর্তির জন্য নির্বাচিত হলে তখন ফি দিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে ভর্তি হতে হবে। আবেদনের সময় কোনো ফি দিতে হবে না। ভর্তির বাইরে থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য এটাই শেষ সুযোগ উল্লেখ করে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, পরবর্তীতে আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।
শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি কলেজগুলোর পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বেসরকারি কিছু কলেজকে ম্যানুয়ালি প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছে। এ ধরনের প্রায় ২৫টি কলেজের তালিকা আমরা বোর্ডের ওয়েবসাইটে দিয়েছি। এসব কলেজে ম্যানুয়ালি কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাবে না। তবে এসব কলেজ বাদ দিয়ে বাকি কলেজগুলোতে আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে ম্যানুয়ালি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে।
ম্যানুয়ালি আবেদন ও ভর্তির সময়সূচি : আসন শূন্য ও ন্যূনতম জিপিএ থাকা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট কলেজে ১৩ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ম্যানুয়ালি আবদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। আবেদন যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্ট কলেজগুলো ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের মেধাভিত্তিক তালিকা প্রকাশ করবে ১৮ অক্টোবর। ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের ফি জমা দিয়ে ১৯ ও ২০ অক্টোবরের মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। ম্যানুয়ালি ভর্তি ফি বাবদ ৪৫০ টাকা দিতে হবে শিক্ষার্থীকে। আর ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অবশ্যই মানতে হবে কলেজগুলোকে। মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার বাইরে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোন ফি আদায় করা যাবে না।
যেসব কলেজে ম্যানুয়ালি ভর্তি নয় : ম্যানুয়ালি ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা সরকারি কলেজগুলো হল- চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ, সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, সরকারি সিটি কলেজ, সরকারি কমার্স কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ, বাকলিয়া সরকারি কলেজ, কলজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজ, স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজ, পটিয়া সরকারি কলেজ, সাতকানিয়া সরকারি কলেজ, কঙবাজার সরকারি কলেজ, কঙবাজার সরকারি মহিলা কলেজ, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ, রাঙামাটি সরকারি কলেজ ও বান্দরবান সরকারি কলেজ। অবশ্য বান্দরবান সরকারি কলেজের বিজ্ঞান শাখা, গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের মানবিক শাখা এবং রাঙামাটি সরকারি কলেজ ও খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ম্যানুয়ালি কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক।
ম্যানুয়ালি ভর্তির বাইরে যেসব বেসরকারি কলেজ : ম্যানুয়ালি ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা বেসরকারি কলেজগুলো হল- হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজ, কাপাসগোলা সিটিকর্পোরশন মহিলা কলেজ, হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, হাটহাজারী কলেজ, ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, কাফকো স্কুল এন্ড কলেজ, পশ্চিম কধুরখীল স্কুল এন্ড কলেজ, বিএস পাবলিক কলেজ ও কর্ণফুলী পাবলিক কলেজ। যদিও শেষের তিনটি কলেজে একজন শিক্ষার্থীও ভর্তি না হওয়ায় ম্যানুয়ালি ভর্তি প্রক্রিয়াও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত শিক্ষাবোর্ডের।
প্রসঙ্গত, তিন দফা আবেদন গ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশের পর একাদশে ভর্তিতে মনোনীত ও নিশ্চায়নকৃত শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়েছে ১৭ সেপ্টেম্বর। ভর্তি কার্যক্রম শেষে এরইমধ্যে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। তবে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ক্লাস শুরু করলেও চট্টগ্রামের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী এখনো ভর্তির বাইরে রয়েছে। অনলাইনে তিন দফা আবেদন পরবর্তী প্রকাশিত ফলাফলে ভর্তির জন্য কোনো কলেজ পায়নি এসব শিক্ষার্থী। অবশেষে তাদের ম্যানুয়ালি ভর্তির সুযোগ দিচ্ছে শিক্ষাবোর্ড। যদিও এটি তাদের জন্য শেষ সুযোগ বলছেন শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তী।
শিক্ষাবোর্ডের কলেজ শাখা সূত্রে জানা যায়, প্রথম দুই দফা প্রকাশিত ফলাফলে মনোনীতদের মাঝে মোট ১ লাখ ২ হাজার ৪৭৮ শিক্ষার্থী তাদের ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন সম্পন্ন করে। আর সর্বশেষ ৩য় দফা ফলাফলে মনোনীত ৭ হাজার ৬৮৬ জনসহ ভর্তির জন্য কলেজ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজার ১৬৪ জন। যদিও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন কলেজগুলোতে একাদশে ভর্তিতে তিন দফায় মোট ১ লাখ ২০ হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করেছে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি সূত্রে জানা গেছে। হিসেবে আবেদন করেও প্রায় ১০ হাজার (৯ হাজার ৮৩৬ জন) শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য কলেজ পায়নি। অর্থাৎ এসব শিক্ষার্থী এখনো ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এবার এসএসসি পাস করে প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার শিক্ষার্থী। সে হিসেবে এসএসসি উত্তীর্ণ মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী এখনো ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে। অবশ্য প্রতিবছর এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কারিগরি, মাদ্রাসা ও অন্যান্য বোর্ডের অধীন কলেজগুলোতে ভর্তি হয়ে থাকে বলে জানান চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহেদুল হক। যার কারণে ভর্তির বাইরে থাকা প্রকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরো কম হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। তবে যে সংখ্যক শিক্ষার্থীই ভর্তির বাইরে থাকুক না কেন, সবাই ভর্তির সুযোগ পাবে, কেউ ভর্তির বাইরে থাকবে না বলে জানান প্রফেসর জাহেদুল হক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের ৮৪ জনসহ এনবিআরের ৩২৯ কর্মকর্তাকে বদলি
পরবর্তী নিবন্ধসিলেটে পুলিশ হেফাজতে যুবকের মৃত্যু, স্ত্রীর মামলা