একাদশে ভর্তি : শেষ ভরসা মানসম্পন্ন বেসরকারী কলেজ

আজাদী অনলাইন | বৃহস্পতিবার , ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৫:০৭ পূর্বাহ্ণ

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শেষে গোল্ডেন জিপিএ-৫ ধারীরা অনেকটা নির্ভার হলেও জিপিএ-৫ ধারীরাও রয়েছেন শংকায়।আর ৫-এর চেয়ে কম জিপিএপ্রাপ্তদের কথাতো বলাই বাহুল্য্ ! বিশেষত: বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীরা রয়েছে চরম দুশ্চিন্তায়! কেননা প্রতিবছরের মত এবারও নগরীর খ্যাতিমান সরকারী কলেজগুলোতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ প্রাপ্তরাই ঠাঁই করে নেবে।

গত ২৮ নভেম্বর প্রকাশিত ফলাফলে এ বছর চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পাস করেছে ১ লাখ ৩০ হাজার ১৩ জন শিক্ষার্থী । জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ৬৬৪ জন।এর মধ্যে বিজ্ঞান শাখা থেকেই জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ১৪,৫২৫ জন।অথচ নগরীর সরকারী কলেজ সমূহের বিজ্ঞান শাখায় মোট আসন সংখ্যা এর প্রায় এক চতুর্থাংশ!
তাই নগরীর সরকারী কলেজ সমূহের বিজ্ঞান শাখায় ৩৫০০ আসনের বিপরীতে প্রায় ৭৫,০০০ আবেদন যাচাই বাছাই করে ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিতব্য প্রথম ফলাফলে হাজারো বিজ্ঞান শিক্ষার্থীর স্বপ্নভংগ হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। এদের মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী কোন কলেজের জন্যই মনোনীত হবেনা! আবার অনেকে মনোনয়ন পাবে এমন সব কলেজে যেখানে শিক্ষার পরিবেশ মান সম্পন্ন নয়।

এবার একাদশে ভর্তিতে সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা হতে চলেছে চট্টগ্রামের সেরা ৩ কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে। উক্ত কলেজগুলোতে বিজ্ঞান বিভাগের সিট সংখ্যা যথাক্রমেঃ চট্টগ্রাম কলেজ(৬৬০), মহসিন কলেজ(৬৬০), সিটি কলেজ(৬৬০)।জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ১২০০ এর উপরে নম্বর পেয়েছে ৩৩০০ জন। ১ম ১০০০ জনের মোট প্রাপ্ত নম্বর ১২৩২ এর উপরে।

তবে হতাশার বিপরীতে আশার আলো হয়ে আসতে পারে বেশ কিছু বেসরকারী কলেজ।বন্দরনগরীর শিক্ষাসচেতন অভিভাবকদের কাছে সরকারী কলেজের পর দ্বিতীয় পছন্দের তালিকায় রয়েছে শিক্ষাবোর্ড অনুমোদিত চট্টগ্রাম ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজ, , সিডিএ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ অব সায়েন্স, বিজনেস এন্ড হিউমেনিটিজ ,হাজেরা তজু ডিগ্রী কলেজ ইত্যাদি।

এ প্রসংগে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো. জাহেদুল হক বলেন, প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার্থী অনুপাতে কলেজে পর্যাপ্ত আসন রয়েছে।সংকট কেবল ভালো কলেজের আসন সংখ্যার। তবে শিক্ষাবোর্ড অনুমোদিত বেশ কিছু বেসরকারী কলেজ মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করছে।

বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের জন্য নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ ড. জাহেদ খান এ প্রসংগে বলেন,`সরকারী কলেজে পড়ার সুযোগ না পেলেও উন্নততর শিক্ষাপরিবেশ, নিয়মিত ক্লাস গ্রহণ, মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্লাসনির্ভর পাঠদান, মেধাবী শিক্ষকগণের তৈরী হ্যান্ডনোট, ছাত্রছাত্রীদের নিবিড় পরিচর্যা, দ্রুত সিলেবাস সমাপন ইত্যাদি ব্যতিক্রমী পাঠপদ্ধতি সম্পন্ন প্রাইভেট কলেজ চট্টগ্রামে রয়েছে।

যেমন চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজে এসএসসি-তে জিপিএ ৪.৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে এইচএসসি-তে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হচ্ছে!২০২১সালে ৩৯জন এ+ সহ এপর্যন্ত মোট ১৪৯০জন এই কলেজ থেকে এ+/এ অর্জন করেছে।অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে থাকে জিপিএ বৃদ্ধির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা। এখান থেকে পাশ করে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার গৌরব অর্জন করছে প্রতিবছর। অতএব সরকারী বেসরকারী মুখ্য বিষয় নয় নিয়মিত ক্লাস করলে এবং মনেযোগী হলে প্রাইভেট কলেজ থেকেও ভালো ফলাফল করা সম্ভব।
যাচাই-বাছাই শেষে আগামী ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টায় প্রথম দফায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১ থেকে ৮ জানুয়ারি নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চায়ন করতে হবে। এই সময়ে ভর্তি নিশ্চায়ন না করলে মনোনয়ন ও আবেদন বাতিল হয়ে যাবে।তাই মেধাতালিকায় আসা কলেজ কারো পছন্দ না হলে শিক্ষার্থী ঐ কলেজে ভর্তি নিশ্চয়ন করবেনা। ফলে সে ৯ ও ১০ জানুয়ারি পুনরায় আবেদন করতে পারবে এবং পছন্দক্রমে যে কলেজের নাম প্রথমদিকে রাখবে, সে কলেজেই ভর্তি হতে পারবে’।

এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের সচেতন অভিভাবকমহল আস্থা রাখছে প্রাইভেট ডিজিটাল কলেজগুলোর উপর, এমনটি জানিয়ে একজন অভিভাবক সালেক সিদ্দিকী বলেন, প্রাইভেট কলেজে পড়াতে হলে ডিজিটাল ক্লাসের সুযোগ রয়েছে এমন কলেজকে প্রধান্য দেয়া উচিত, যাতে শিক্ষার্থীর কাছে পাঠ সহজবোধ্য হয়, ক্লাসে উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায় এবং বিশেষ পরিস্থিতিতেও শিক্ষার ধারা অব্যাহত থাকে।
[

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাউছিয়া জিলানী সমাজ কল্যাণ পরিষদের চিকিৎসা ক্যাম্প
পরবর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে বনবিড়াল উদ্ধার