বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর রাতে চিরবিদায় নিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী নমিতা ঘোষ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার রাত ১০টায় তার মৃত্যু হয়। তার বোন কবিতা ঘোষ জানান, নমিতা ঘোষের বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। খবর বিডিনিউজের।
দীর্ঘদিন ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে সেরে উঠেছিলেন নমিতা ঘোষ; ফের নিয়মিত হয়েছিলেন গানে। সবশেষ ১২ মার্চ বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। দুই দিনের ব্যবধানে ১৪ মার্চ থেকে জ্বর ও কাশি নিয়ে দুই হাসপাতাল ঘোরার পর তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ১৬ মার্চ থেকে পপুলার হাসপাতালের এইচডিওতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
নমিতা ঘোষ মাত্র ১৪ বছর বয়সে স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে প্রথম নারী শিল্পী হিসেবে নিয়মিত সংগীত পরিবেশন করেছেন। নমিতার মা যশোদা ঘোষ সে সময় রেডিওতে নিয়মিত সংগীত পরিবেশন করতেন। ঢাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা শুরু হলে ২৭ মার্চ বুড়িগঙ্গা পেরিয়ে কেরাণীগঞ্জ হয়ে কুমিল্লা দিয়ে আখাউড়া সীমান্ত পার হন তারা। সেখানে শিল্পী আব্দুল জব্বার ও আপেল মাহমুদের সঙ্গে দেখা হয় নমিতার। তখন সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে ক্যাম্পে গিয়ে গান গেয়ে অনুপ্রেরণা দেওয়ার পরিকল্পনা চলছিল।
আগরতলায় থাকতেই মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্রের কাজে যুক্ত হন নমিতা। পরে সেই প্রামাণ্যচিত্র যুদ্ধের সময় ভারতের বিভিন্ন সিনেমা হলে দেখানো হয়। মে মাসে মায়ের সঙ্গে আগরতলা থেকে বিমানে করে কলকাতায় পৌঁছান নমিতা। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম প্রেস সচিব, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আমিনুল হক বাদশার উৎসাহে যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে।