সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে নিজেদের আপত্তি তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সব প্রস্তাবে শতভাগ একমত হতে বললে আলোচনার জন্য ডাকার কোনো মানেই নেই। তিনি বলেন, এখন যদি আমাদের বাধ্য করা হয় যে এসব বিষয়ে একমত হতেই হবে, সেটাতো মানা সম্ভব না। গতকাল সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার বিংশতম বৈঠক শেষে বিফ্রিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এদিন বাকবিতণ্ডা আর চাপাচাপির মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধানের নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়ে। এতে করে এদিন সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচনার কথা থাকলেও তা হয়নি। খবর বিডিনিউজের।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের মত কমিশনের পক্ষ থেকে চাপাচাপির বিষয়টি তুলে ধরেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, আর চাপাচাপি করাও যৌক্তিক নয়। এতে বৈঠক দীর্ঘায়িত হচ্ছে। তার মতে, জোর করে ঐকমত্যের চেষ্টা যথাযথ হবে না।
দিনভর বৈঠকের বিষয়ে বিফ্রিংয়ে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন বলেন, কমিশনে আমাদের একটা শর্ত ছিল যে, এনসিসির মতো বা সাংবিধানিক নিয়োগ কমিটির মতো কোনো বিষয় এখানে থাকলে সেই বিবেচনা আগের প্রস্তাব অনুসারে যেতে হবে আমাদের। সেই বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি যেমন সংসদের কাছে, তেমনি জনগণের কাছেও রয়েছে। কিন্তু যদি কর্তৃত্ব না থাকে, কেবল দায়িত্ব আর জবাবদিহি থাকে, তাহলে তা কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যথেষ্ট নয়। সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগে নির্বাহী বিভাগের হাত–পা বাঁধা হলে তা ভবিষ্যতের জন্য বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, জনগণের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাহী বিভাগকে শক্তিশালী হতে হবে, দুর্বল নয়। জাতীয় ঐকমত্য পোষণ হলে যেসব বিষয়ে দলগুলো একমত হবে, সেই বিষয়গুলো এক করে জুলাই সনদ বা জাতীয় সনদে সই হওয়ার কথা। এখন যদি আমাদের বাধ্য করা হয় যে এসব বিষয়ে একমত হতেই হবে, সেটাতো মানা সম্ভব না। নির্বাচন কমিশন গঠনে একটি স্বাধীন সার্চ কমিটি গঠন করা হোক, যেখানে সরকারি দল, বিরোধী দল ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি থাকবে, সেটিও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে পরবর্তী সময়ে সংসদ কোনো সংশোধনী আনলে, তা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের আগে গণভোটে যেতে হবে। এটি গৃহীত হওয়া মানে, দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।