ভালোবাসা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। ভালোবাসা আছে বলেই পৃথিবী এখনো বাসযোগ্য, উপভোগ করার মতো সুন্দর। প্রতিটি মানুষই ভালোবাসাকামী। চারপাশের মানুষগুলোর সাথে ভালোবাসার মণিবন্ধনে আবদ্ধ থাকতে কে না পছন্দ করে। তবে ভালোবাসা প্রাপ্তির বিষয়টা ব্যক্তির ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষার উপর নির্ভর করে না। এ বিষয়টি চারপাশের মানুষের আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি ও মননশীলতার উপর নির্ভরশীল। প্রতিটি মানুষের জীবনে কোনো না কোনো সময় ব্যর্থতা বা হতাশা নেমে আসে। ব্যর্থতা বা হতাশার করাল গ্রাসে কারো কারো জীবন বিপন্ন হয়ে ওঠে। মানুষ হিসেবে আমাদের ভালোবাসার চর্চা জিইয়ে রাখতে হবে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর শেষের কবিতায় লিখেছেন, ‘তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারি দান গ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়’। তিনি বুঝাতে চেয়েছেন প্রেম-ভালোবাসা মূলত পাওয়ার চেয়ে, দেওয়াতেই প্রকৃত সুখ। অথচ এই অমোঘ সত্যটা অস্বীকার করে আমরা ভালোবাসা পাওয়াকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকি। ভালোবাসার ঘাটতি কখনো অবহেলায় মোড় নিলে আমরা ভুলে যাই কে কবে ভালোবেসেছিলো উজাড় করে। অবহেলার শোধ যদি নিতেই হয় তা দ্বিগুণ অবহেলাতেই যে শুধু নেওয়া যায় তা কিন্তু নয়। অবহেলার জবাবে ভালোবাসা দিলে সেটি হবে শ্রেষ্ঠ প্রতিশোধ। আমাদের যারা ভালোবাসেন বা বেসেছেন তাদেরই যে শুধু আমরা ভালোবাসবো তাও কিন্তু নয়। ভালো তাকেও বাসা যায় যে কোনোদিন ভালোবাসেনি আমাদের। আর যে বা আমাদের ভালোবেসেছেন, আগলে রেখেছেন পরম মমতায় তাদের ভালোবাসার ঋণ শোধ করতে না পারি, অন্তত ফিরিয়ে দিতে পারি দ্বিগুণ ভালোবাসা।