কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও পরবর্তী সহিংস পরিস্থিতির কারণে গত ১৩ দিন ধরে সারাদেশে সকল ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। গত ২৬ জুলাই থেকে বিজিবি পাহারায় সারাদেশে জ্বালানি তেল ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ফার্নেস অয়েল পরিবহন শুরু হলেও যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। গতকাল থেকে শুধুমাত্র স্বল্প দূরত্বে মেইল–লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
এদিকে সড়ক যোগাযোগ এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু এখনো ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকায় এ পথের যাত্রীদের যাতায়াত বিঘ্ন ঘটছে। রেলের বাণিজ্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, সারাদেশে সবগুলো আন্তঃনগর, লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেন মিলে প্রতিদিন ২ লাখ ১৫ হাজার টিকিট বিক্রি হয়। শুধু যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল একদিন বন্ধ থাকলে অন্তত ৪ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেলের বাণিজ্য বিভাগ। গত ১৩ দিনে রেলে যাত্রীবাহী ট্রেনে টিকিটি বিক্রি বন্ধ থাকায় রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে প্রায় ৫২ কোটি টাকার মতো।
এই ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) সরদার সাহাদাত আলী আজাদীকে বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বৃহস্পতিবার (গতকাল ১ আগস্ট) থেকে শুধু কারফিউ শিথিল সময়ে স্বল্প দূরত্বের মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চালুর ব্যাপারে। তবে আন্তঃনগর ট্রেন চালুর ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সারাদেশে সবগুলো আন্তঃনগর, লোকাল, মেইল ও কমিউটার ট্রেন মিলে প্রতিদিন ২ লাখ ১৫ হাজার টিকিট বিক্রি হয়। স্বল্প দূরত্বে মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হলেও মালবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রেলওয়ের পরিবহন বিভাগ থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই ঢাকায় যাওয়ার পথে নরসিংদীতে হামলার শিকার হলে একটি ট্রেনের তিনটি কোচ আগুনে পুড়ে যায়। এ ছাড়া সেদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হামলার শিকার হয় বেশ কয়েকটি ট্রেন। এতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশ কয়েকটি কোচ। সেদিন রাতে সারাদেশে কারফিউ জারি করা হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায় সারাদেশের ট্রেন চলাচল। এতে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ে রাষ্ট্রীয় এই পরিবহন খাত।
রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ থেকে আরো জানা গেছে, ভারতের সঙ্গে আন্তঃদেশীয় যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় এদিকে দিনে প্রায় তিন কোটি টাকা লোকসান।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল থেকে জানা গেছে, পূর্বাঞ্চল থেকে প্রতিদিন চট্টগ্রাম–ঢাকা, চট্টগ্রাম–সিলেট, চট্টগ্রাম–ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম–জামালপুর, ঢাকা–চট্টগ্রাম–কক্সবাজার, চট্টগ্রাম–চাঁদপুর, চট্টগ্রাম–নাজিরহাট রুটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৫৭টি আন্তঃনগর, মেইল, কমিউটার এবং মালবাহী ট্রেন চলাচল করে।