চাহিদা না থাকলেও এখনো বাড়ছে এলাচের দাম। গত একদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি এলাচের দাম বেড়েছে কেজিতে ১৪০ টাকা পর্যন্ত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে চাহিদা নেই। তবে প্রতিদিন টনে টনে এলাচের ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) স্লিপ বিক্রি হচ্ছে। বাজারে যে পরিমাণ এলাচের ডিও স্লিপ বিক্রি হয়েছে, সেই পরিমাণ এলাচ ব্যবসায়ীদের হাতেও নেই। ভোক্তারা বলছেন, এলাচ খুবই স্লো একটি আইটেম। তারপরেও এলাচের দাম এভাবে লাগামহীন হওয়া অস্বাভাবিক।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন গরম মসলা ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের কিছু ট্রেডার আছে, যারা সব সময় তেল ও চিনিতে বিনিয়োগ করেন, তারা কয়েক মাস আগের মতো আবারও এলাচের বাজারে ট্রেডিং ব্যবসা শুরু করেছেন। তাই গত এক দিনের ব্যবধানে এলাচের দাম কেজিতে ১৪০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ীরা জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবেও স্বীকৃত নয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘ডিও স্লিপ’। এলাচ কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও স্লিপ বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন বাজারে অস্থিরতা তৈরি করা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, বাজারে যে পরিমাণ এলাচ মজুদ রয়েছে, তার চেয়ে বেশি স্লিপ বিক্রি হচ্ছে। যে দরে ডিও স্লিপ বিক্রি হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রায় সব ধরনের মসলা আমদানি করতে হয়। এলাচ আসে গুয়েতমালা থেকে। বাকি সব পণ্য ভারত থেকেও আসে। তবে এটি ঠিক বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে গরম মসলার বুকিং দর বেড়েছে। তবে বাজার চাহিদা এবং মসলার মজুদ হিসেব করলে এই মুহূর্তে দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, বর্তমানে বাজারে এলাচের কোনো ঘাটতি নেই। তবে বাজার এখনো নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী এলাচ নিয়ে ট্রেডিং (হাতবদল) করছেন। যার কারণে বাজার উঠানামা করছে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভোগ্যপণ্যের বাজার ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভরশীল। প্রশাসনকে ভোগ্যপণ্যের বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এলাচ নিত্যপণ্য নয়, তারপরেও এলাচের দাম অস্বভাবিকভাবে বাড়ছে।












