একদিনের ব্যবধানে মৃত্যু প্রায় দ্বিগুণ

দেশে মৃত্যু ছাড়াল ৭ হাজার মোট আক্রান্ত ৪ লাখ ৮৯ হাজার ১৭৮

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৫:০০ পূর্বাহ্ণ

দেশে আরও ৩৪ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে নতুন করোনাভাইরাস, যাতে মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ ৩৮ দিনে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার জন মারা গেছেন। গত ৪ নভেম্বর দেশে মৃতের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছিল। গতকাল শনিবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ যে তথ্য জানানো হয়, তাতে আরও ৩৪ জনের মৃতের খবর আসে। এক দিনের ব্যবধানে মৃত্যু প্রায় দ্বিগুণ বাড়লেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে মৃত্যু ৬.১৭ শতাংশ এবং শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১২.৮৫ শতাংশ কমেছে। এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে মৃতের হার ঢাকা বিভাগে ৫৪ দশমিক ৪০ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ, খুলনায় ৭ দশমিক ১৯ শতাংশ, বরিশালে ৩ দশমিক ২৯ শতাংশ, সিলেটে ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, রংপুরে ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ ও ময়মনসিংহে ২ দশমিক ১৮ শতাংশ। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশে প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রথম মৃত্যুর এক মাস পর ২০ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছিল। তা হাজার ছাড়িয়েছিল ২০ দিন পর গত ১০ জুন। এরপর এক মাসেরও কম সময়ে ৫ জুলাই আরও এক হাজার মানুষ যোগ হয় মৃতের তালিকায়, যা সংখ্যাটি দুই হাজারের ঘরে নিয়ে তোলে। মৃতের সংখ্যা আরও এক হাজার বাড়তে লেগেছিল আরও কম সময়। ২৩ দিনেই ২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে। এরপর ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার এবং তার প্রায় এক মাস পর ২২ সেপ্টেম্বর মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়ায়। তার পরের এক হাজারের মৃত্যুতে সময় লেগেছিল ৩৩ দিন; আরও এক হাজার বেড়ে ৭ হাজার ছাড়াতে লাগল ৩৮ দিন।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৬ লাখ ছুঁইছুঁই করছে। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র (২ লাখ ৯৫ হাজার), বাংলাদেশে রয়েছে ৩২তম স্থানে। শনাক্ত রোগী বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ২৬তম অবস্থানে। বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৭ কোটি ১১ লাখের বেশি, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রে দেড় কোটির বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত ১ হাজার ৩২৯ জনকে নিয়ে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ১৭৮ জন হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৩ হাজার ১৮৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত একদিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ১৭ হাজার ৫০৩ জন হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ৬৩০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০.৫২ শতাংশ। মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬.৫৪ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় যে ৩৪ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২৩ জন, নারী ১১ জন। এই ৩৪ জনের মধ্যে ৩২ জনই হাসপাতালে মারা গেছেন; বাড়িতে মৃত্যু হয় দুজনের। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ নাগাদ যারা মারা গেছেন তাদের ৫ হাজার ৩৬২ জন পুরুষ, নারী ১ হাজার ৬৫৮ জন।
এই পর্যন্ত যারা মারা গেছেন, তাদের বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে জানানো হয়, ষাটোর্ধ্ব রোগীদের মৃত্যুর হার ৫৩ দশমিক ৮০ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ২৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ১১ দশমিক ৯১ শতাংশ, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ৫ দশমিক ০৯ শতাংশ, ২১ থেকে ৩০ বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার ২ দশমিক ২২ শতাংশ, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশ ও শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সী রোগীদের মৃত্যুর হার শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২৪ জন। বাকিদের মধ্যে ৪ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন বরিশাল বিভাগের, ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের, ২ জন সিলেট বিভাগের ও ২ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে একদিনে ১০.৩৬ শতাংশের পজিটিভ
পরবর্তী নিবন্ধবিজয়ের মাসে নগর বিএনপির তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা