একদিনেই ১৩ লাখ টাকার বই বিক্রি প্রকাশকের মুখে হাসির ঝিলিক

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

বইমেলার ১৪তম দিন ছিল গত ২১ ফেব্রুয়ারি। এদিন সকাল থেকেই জমজমাট ছিল বইমেলা। পাঠক, লেখক, দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড় ছিল মেলাপ্রাঙ্গণ। অন্য দিনগুলোতে ভিড় থাকলেও বিক্রি কম হওয়ার অভিযোগ করেন প্রকাশকরা। তবে গত মঙ্গলবার মেলায় যারা এসেছেন তাদের বেশিরভাগই বাড়ি ফিরেছেন বই কিনে। এতে হাসির ঝিলিক দেখা দেয় প্রকাশকের মুখে। বইমেলার দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এদিন বিক্রি হয়েছে ১২ লাখ ৮০ হাজার ৭০০ টাকার বই। যা এ বছর মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে একদিনে সর্বোচ্চ বিক্রি।

মেলায় অংশ নেয়া বিভিন্ন প্রকাশনা স্টলের বিক্রয় কর্মীর সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ছোট স্টলগুলোতে গড়ে ১০ হাজার টাকা এবং বড় ও সমৃদ্ধ বই রয়েছে এমন স্টলগুলোতে গড়ে ২০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। আপন আলো প্রকাশনার স্বত্তাধিকারী শামসুদ্দিন শিশির আজাদীকে বলেন, শুক্রবারের পর বেশি সাড়া পেয়েছি ২১ ফেব্রুয়ারি। শিশুপ্রকাশ এর আরিফ রায়হান বলেন, প্রচুর মানুষ এসেছে। বিক্রিও ভালো হয়েছে। নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ল জিমনেশিয়াম মাঠে বইমেলা শুরু ৮ ফেব্রুয়ারি। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

এদিকে গতকাল বুধবার মেলামঞ্চে ছিল চাটগাঁ উৎসব। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ডা. রাজিব রঞ্জন। তিনি বলেন, ভারতবাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক ও প্রাচীন। দুই দেশের সংস্কৃতি এক ও অভিন্ন। বর্তমানে দেশ দুটির বিদ্যমান সুসম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বর্তমান সরকারের আমলে আর্থসামাজিকতো বটেই বিশ্ব রাজনীতিতেও বাংলাদেশ নিজের দৃঢ় অবস্থানটি তৈরি করে নিতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রায় অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে ভারত সবসময় ছিল, আছে এবং থাকবে। এই দুই ভ্রাতৃপ্রতিম বন্ধুরাষ্ট্রের মধ্যে অর্থনৈতিকসামাজিকসাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের যে বন্ধন রয়েছে তা আরো দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হচ্ছে। প্রতিটি উৎসব আমাদেরকে আনন্দ দেয়, অনুপ্রেরণা যোগায়। পারস্পরিক ভালোবাসা ও সহমর্মিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিকভাবে উন্নত মানুষে পরিণত করে। জীবনকে আনন্দময় করে তুলতে উৎসবের শিক্ষাকে হৃদয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে।

চসিক সমাজ কল্যাণ ও কমিউনিটি সেন্টার স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুমের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান। আলোচনা করেন একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, বাংলাদেশ জন্মাষ্টমী পরিষদের সভাপতি সুকুমার চৌধুরী, ন্যাপ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিটুল দাশ গুপ্ত, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত ও বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী সঞ্জীত আচার্য। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বই মেলা কমিটির আহবায়ক কাউন্সিলর ড নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু।

আবু সুফিয়ান বলেন, চট্টগ্রাম একশ বা দুইশ বছরের কোনো শহর নয়। এটি হাজার বছরের পুরনো নগর। কৃষ্টি, বৈচিত্র্য ও সাংস্কৃতিক সম্পদে চট্টগ্রাম অতুলনীয়। সমুদ্র তীরবর্তী চট্টগ্রাম চিরকালই ঝড়তুফানজলোচ্ছ্বাস কবলিত অঞ্চল। এখানকার মানুষকে লড়াই করতে হয় প্রকৃতির বিরুদ্ধে। ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম, ভাষা ও সাংস্কৃতিক সংগ্রামে, জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে, মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের মানুষের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা আজ ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। ইতিহাস চট্টগ্রামকে চিহ্নিত করেছে বিপ্লবতীর্থ হিসাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়লো
পরবর্তী নিবন্ধ১৭ গুণী পেলেন চসিকের একুশে স্মারক সম্মাননা