খাগড়াছড়ি জেলা শহরের বিবর্ণ খেলার মাঠ এখন সবুজ নরম ঘাসে মোড়ানো। ৫ মাসের প্রচেষ্টায় খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠকে খেলার উপযোগী করেছে জেলা শহরের দুই তরুণ। মূলত যুব সমাজকে মাদক ও মোবাইল আসক্তি থেকে ফিরাতে দুই সরকারি কর্মকর্তার এমন উদ্যোগ। মাঠটি সংস্কার হওয়ায় ক্রীড়াপ্রেমীরা পেয়েছেন খেলার সুযোগ। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা।
খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ত্রিনা চাকমা জানান, খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠটি এব্রো-থেব্রো হওয়ায় খেলার অনুপোযুক্ত ছিল। খেলতে গিয়ে খেলোয়াড়রা আহত হতেন। অর্থ সংকটের কারণে মাঠ সংস্কার করতে পারছিলাম না। স্কুলের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও বিভিন্ন একাডেমির খেলোয়াড়রা এখানে নিয়মিত খেলাধুলা করে। তবে পুরো মাঠটি সংস্কার হওয়ায় এখন সবাই খেলাধুলা করতে পারছে। খেলোয়াড়রা বলেন, আমাদের একটা স্বপ্ন ছিল খেলার মাঠ সবুজে মোড়ানো থাকবে। আগে প্রেকটিস করার সময় হাত-পায়ে ব্যাথা পেতাম। ধুলোবালিতে ভরা ছিল। খেলার সময় মাঠের উপর গাড়ি চলত। এখন মাঠটি সংস্কার হওয়ায় খেলার উপযুক্ত হয়েছে। ফলে ক্রীড়াঙ্গনের সবাই আনন্দিত।
খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সাজ্জাদ হোসেন খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠটি সংস্কার ও সবুজায়নের উদ্যোগ নেন। মাঠ সমান করার পাশাপাশি লাগানো হয় সবুজ ঘাস। এতে সময় লাগে প্রায় ৫ মাস। টানা প্রায় ৫ মাস বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি মাঠটি খেলার উপযুক্ত করে ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
খাগড়াছড়ির পার্বত্য একাডেমির পরিচালক দিদারুল আলম জানান, মাঠটি সংষ্কার হওয়া ক্রীড়াপ্রেমীদের প্রাণের দাবি ছিল। দেরিতে হলেও দুই তরুণের উদ্যোগে মাঠটি খেলার উপযুক্ত হয়েছে।
এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে চলতি মাসের শুরুতেই সবুজ মাঠের উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন সরকারি স্কুলের মাঠ খেলাধুলার উপযোগী ছিল না। খাগড়াছড়ির সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা ও শিক্ষক সাজেদ মাহমুদের উদ্যোগে সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠ সংস্কার করা হয়েছে। তাদের এই উদ্যোগেকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। মাঠটি সংস্কারের পর তা খেলার উপযুক্ত ও সুন্দর হয়েছে। ভবিষ্যতে এর মান্নোয়নে আরো কিছু পদক্ষেপ নেয়া হবে। সবাই মিলে এই মাঠকে সংরক্ষণ করতে হবে।
খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠকে সংস্কার ও সবুজায়নের রূপকার খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, বর্তমান প্রজন্ম খেলাধুলার মধ্যে নেই। তারা মোবাইল গেইম, মাদক ও ইন্টারনেটসহ বিভিন্নভাবে আসক্ত। বিশেষ করে খেলার মাঠ না থাকার কারণে কিশোর তরুণরা খেলাবিমুখ হচ্ছে। মাঠটি সংস্কার হওয়ায় এখন খেলাধুলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ক্রীড়াপ্রেমীদের পদচারণায় আবার মুখরিত হয়েছে সবুজ মাঠ।
