বান্দরবানের থানচি উপজেলায় সাঙ্গু নদীতে নির্মিত সপ্তম সেতুতে বদলে গেছে পাহাড়ের ১৫টি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অর্থনৈতিক অবস্থা। পর্যটন শিল্পের বিকাশে বলিপাড়া থেকে হালিরাম পাড়া হয়ে কেঁচো পাড়া অভ্যন্তরীন সংযোগ সড়ক স্থাপিত হওয়ায় সেতুটি সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলেছে।
প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ২০১৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে বলিপাড়া এলাকায় খরস্রোতা সাঙ্গু নদীর উপরে সপ্তম সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের শেষ দিকে ১৮৩ মিটার পিসি গার্ডার ব্রিজ এবং ৭০ মিটার রেম্পসহ পুরো সেতুটি নির্মাণের কাজ শেষ হয়। অপরদিকে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে হালিরাম পাড়া হয়ে কেঁচো পাড়া চার কিলোমিটার সড়কসহ হালিরাম পাড়া পাহাড়ি খালের উপরে ছোট আরও দুটি সেতু নির্মাণের মাধ্যমে পুরো প্রকল্পটির বাস্তবায়িত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সাথোয়াই, চাইসিং মারমা বলেন, বলিপাড়া সাঙ্গু নদীতে নির্মিত নতুন সেতুতে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হয়েছে আশপাশের কমপক্ষে ১৫টি পাহাড়ি গ্রামের মানুষের। এটি এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। প্রকল্পে কেঁচো পাড়া হয়ে সড়কটিও সংযুক্ত হওয়ায় প্রায় বিশ হাজার মানুষের ভাগ্যের চাকা খুলেছে। পর্যটন শিল্প ছাড়াও উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাতকরণের পথ তৈরি হয়েছে। গোটা প্রকল্পটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের পর্যটন শিল্প এবং কৃষি বান্ধব অর্থনীতির সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে।
স্থানীয় শিক্ষার্থী থোয়াইনু ও হ্লামে প্রু বলেন, ছোট বেলা থেকেই দেখে এসেছি বাবা–মা পাড়াবাসীরা কতটা কষ্ট করে নৌকায় নদী পার হয়ে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিত। কষ্টের সঙ্গে বাজারে কৃষিপণ্য বিক্রি করে পোষাতো বাবাদের। তবে সেতুটি নির্মিত হওয়ায় বদলেছে চিত্র। এখন পাড়ায় এসেই গাড়িতে উৎপাদিত কৃষিপণ্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। দুর্ভোগ কমেছে শিক্ষার্থী ও অসুস্থ রোগীদের যাতায়াতেও। বিষয়টি নিশ্চিত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন ইয়াছির আরাফাত বলেন, বলিপাড়া এলাকায় নির্মিত সেতুটি হলো সাঙ্গু নদীর ওপরে নির্মিত সপ্তম সেতু। পর্যটন শিল্পের বিকাশে সেতুটি আকর্ষণীয় ডিজাইন দৃষ্টিনন্দন করে নির্মিত হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের মাধ্যমে শুধু যোগাযোগ নয়, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিও নিশ্চিত হয়েছে আশপাশের ১৪–১৫টি গ্রামের মানুষের। কৃষি ক্ষেত্রে ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা খাতেও অগ্রগতি হবে।










