একটি সেতু ও অনেক দুর্ভোগের গল্প

ফটিকছড়ির নারায়ণহাট

মোহাম্মদ জিপন উদ্দিন, ফটিকছড়ি | মঙ্গলবার , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

সরকার আসে আর সরকার যায়। কালের বিবর্তনে সবকিছুই পরিবর্তন হলেও ফটিকছড়িতে ১২ গ্রামের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন আজও হয়নি। দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও সেতু না হওয়ায় এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন।

ফটিকছড়ির নারায়ণহাট ইউনিয়নকে দ্বিখণ্ডিত করে বয়ে চলেছে হালদা নদী। নদীর উত্তর পাশে নারায়ণহাট বাজার এবং দক্ষিণ পাশে ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের ১০১২টি গ্রামে প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস। তবে এত বছরেও নদী পারাপারের জন্য গড়ে উঠেনি কোনো ব্রিজ। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদী পার হতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় স্থানীয়দের। বর্ষায় হালদা নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে পানি বৃদ্ধি পেলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়াআসা প্রায় বন্ধ করে দিতে হয়। ইউনিয়নের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি হালদা নদীর নারায়ণহাট বাজার এলাকায় একটি পাকা সেতু নির্মাণ। সেতুটি নির্মিত হলে যাতায়াত ভোগান্তি লাঘবের পাশাপাশি এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হবে বলেও মনে করেন সচেতন মহল।

জানা যায়, এতদিন কাঠবাঁশ দিয়ে বানানো সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হওয়া গেলেও সমপ্রতি বন্যায় ভেঙে যায় সেটি। পরে নদীর পানি কমলে ছোট একটি বাঁশের সাঁকো বানানো হয়। কিন্তু উজানের পানিতে ভেসে যায় ওই সাকোটিও। বর্তমানে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা প্লাস্টিকের একটি বোট। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এ নদী পার হচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, নারায়ণহাট ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে হালদা নদী। নদীর দক্ষিণ পারে রয়েছে জমিদার পাড়া, সুন্দরপুর, হাপানিয়া, রাজারটিলা, আনিচার খিল, খালাছি পাড়া, সন্দ্বীপ পাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। নারায়ণহাট ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, হাপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শামসুনাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এ গণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণহাট ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। নদীর উত্তর পারে রয়েছে নারায়ণহাট বাজার, নারায়ণহাট ইউনিয়ন পরিষদ, নারায়ণহাট ইউনিয়ন ভূমি অফিস, নারায়ণহাট ডিগ্রি কলেজ, কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়ণহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মহিলা মাদ্রাসা, বাস স্টেশনসহ বেশ কয়েকটি কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। দৈনিক কয়েক হাজার মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে হালদা পার হতে হয়। বোটে করে একসাথে ১৫২০ জন পার হয়। অন্যদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে ঝুঁকির পাশাপাশি সময়ও নষ্ট হয় স্থানীয়দের। এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, নারায়ণহাট বাজারের পাশে হালদা নদীতে একটি বেইলি ব্রিজের জন্য প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়েছে। তবে এখন কী অবস্থা জানি না। কোন প্রকল্পে এখনো এটি দেয়া হয় নাই। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ওই এলাকায় আপাতত অস্থায়ী একটি সাঁকো করার জন্য ইউএনওর সাথে আলোচনা করবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধটেকনাফের বদির ভাতিজা শাহজাহান ঢাকায় গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধএই সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে সমর্থ হবে : খসরু