একটি শক্তি নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে, অভিযোগ খসরুর

নির্বাচনের দিনক্ষণ মানুষের সামনে পরিষ্কারভাবে আসতে হবে

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৩ মার্চ, ২০২৫ at ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

একটি শক্তি নির্বাচন, মানুষের অধিকার ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দেশে এনার্কি (নৈরাজ্য) সৃষ্টির প্রক্রিয়া চলছে বলেও দাবি করেন তিনি। সত্যিকার অর্থে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাইলে জনগণের ভোটে একটি নির্বাচিত সরকার ও একটি নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। খসরু বলেন, নির্বাচনের দিনক্ষণ মানুষের সামনে পরিষ্কারভাবে আসতে হবে; যাতে সমস্ত জাতি এটার প্রস্তুতি নিতে পারে।

গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের সম্মানে নগরের লালখান বাজারে একটি কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ইফতার মাহফিল ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজনৈতিকভাবে যারা দৈন্য হয়ে গেছে তারা বিএনপির ক্ষতি করার জন্য বিএনপির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছেএমন বয়ান বাজারে ছড়াচ্ছে বলে দাবি করেন আমীর খসরু। একইসঙ্গে যারা বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না তাদের প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করছে বলেও দাবি করেন।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। নগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শামসুল আলম ও নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।

অনির্বাচিত সরকারের অধীনে দিন যাচ্ছে : আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে কিন্তু এখন কেউ জবাবদিহি নেই। বাংলাদেশে একটি সরকার আছে, কিন্তু তারা যেহেতু ভোটে নির্বাচিত হয়নি, তাদের কিন্তু জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই। এজন্যই আজ একটি নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমরা একেকটি দিন অতিবাহিত করছি একটি অনির্বাচিত সরকারের অধীনে। একেকটি দিন অতিবাহিত করছি জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকারের অধীনে। একেকটি দিন অতিবাহিত করছি বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন যাদের কাছে ঘটেনি, তাদের মাধ্যমে। সুতরাং এটা আমাদের তাড়াতাড়ি করতে হবে, নির্বাচনী ব্যবস্থা শুরু করতে হবে। নির্বাচনের দিনক্ষণ মানুষের সামনে পরিষ্কারভাবে আসতে হবে, সমস্ত জাতি যাতে এটার প্রস্তুতি নিতে পারে।

খসরু বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনার জনগণের যে আকাক্সক্ষা, মালিকানা ফিরে পাবার যে আকাক্সক্ষা, সেটা শেখ হাসিনা যেভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে, এখন আবার আরেকটি শক্তি অন্যভাবে সেটা বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা একভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে, এরা কিন্তু অন্যভাবে সেটা বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে নির্বাচন না হতে পারলে মনে হয় তারা খুব খুশি। শেখ হাসিনার নিজের মতো করে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার যে বিভিন্ন প্রক্রিয়া, এখন মনে হয় কিছু কিছু মানুষের মনে সেই আকাক্সক্ষা জেগেছে। সেই আকাক্সক্ষা হাসিনা একভাবে পূরণ করেছে, এরা আরেকভাবে পূরণ করতে চাচ্ছে। এরা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে। এরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে। এরা বাংলাদেশের মানুষের অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে। এরা বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিএনপি দীর্ঘ ১৬ বছর আন্দোলন করেছে। এ সময়ে অনেক গুমখুন হয়েছে, পুলিশে হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে, আমার সামনে জেলখানায় বিনা চিকিৎসায় বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আমাদের ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ নেতাকর্মী মিথ্যে মামলার আসামি হয়েছে। এই যে ১৬ বছরের আন্দোলনে যে ত্যাগ তার প্রেক্ষিতে ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার সরকারের নেতা দেশ থেকে পলায়ন করেছে। পলায়ন পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা সেটা আমাদের মনে রাখতে হবে। পলায়ন পরবর্তীতে বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে যে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে সেটা রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকসহ সবাইকে অনুধাবন করতে হবে। তাহলেই নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি।

আমীর খসরু বলেন, সত্যিকার অর্থে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাইলে আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে আসতে হবে। কী জন্য আমরা ১৬ বছর আন্দোলন করেছি? বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার মূল বাহক হচ্ছে নির্বাচন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যাবার জন্য মূল বাহক হচ্ছে জনগণের ভোটে একটি নির্বাচিত সরকার, একটি নির্বাচিত সংসদ।

খসরু বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মনে যে আকাক্সক্ষা ও মনোবাসনা জেগেছে, সেটা পূরণের পন্থা হচ্ছে একটা গণতান্ত্রিক অর্ডারে গিয়ে একটি নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে যে পরিবর্তনের কথা আমরা বলছি, সেই পরিবর্তনটা সংসদে নিয়ে আসা। এই পরিবর্তন করার জন্য আর দ্বিতীয় কোনো পন্থা নেই। যারা দ্বিতীয় পন্থার খোঁজে আছে, তারা বাংলাদেশের মানুষের ত্যাগের বিরুদ্ধে কাজ করছে। বাংলাদেশের মানুষ ১৬ বছর ধরে জীবন দিয়ে যে ত্যাগ করেছে, সেটার পরিপূর্ণতা আসবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে। একটি সুষ্ঠু সংসদ, একটি সরকার গঠন করবে, যারা মানুষের সেই আকাক্সক্ষা পূরণ করবে। যাদের ওপর মানুষের ম্যান্ডেট থাকবে, আকাক্সক্ষা পূরণ তাদের মাধ্যমে হতে হবে। সেটা বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে করতে হবে।

খসরু বলেন, আমরা বিগত দিনে দেখেছি, শেখ হাসিনা সেটা পূরণ করতে দেয়নি। সে নির্বাচনবিহীন অবস্থায় বাংলাদেশকে শাসন করে গেছে। জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়েছে, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে, জনগণের মানবাধিকার কেড়ে নিয়েছে, জনগণের সাংবিধানিক, রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এখন সেটি ফেরত দেওয়ার মূল বাহক হবে একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, সুষ্ঠু নির্বাচন। তার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরে আসবে, একটি প্রক্রিয়া ফিরে আসবে, যেটি গণতান্ত্রিক হবে। যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে নির্বাচিত সংসদ, সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে ও জবাবদিহি থাকবে।

তিনি বলেন, দৈনন্দিন যে ঘটনাগুলো ঘটছে আপনারা সবাই দেখছেন। দেশে এনার্কি সৃষ্টি করার একটি প্রক্রিয়া চলছে। অর্থাৎ এনার্কি সৃষ্টি করে যদি নির্বাচনটা বন্ধ করা যায়। এনার্কি সৃষ্টি করে যাতে গণতান্ত্রিক অর্ডারে আমরা ফিরে যেতে না পারি। যেজন্য শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমরা লড়েছি এত বছর, সেই একই প্রক্রিয়া আর চলতে দেওয়া যায় না। বাংলাদেশের মানুষ নিশ্চিতভাবে এই প্রক্রিয়াকে রোধ করবে এবং তারা তাদের ভোটাধিকারের মাধ্যমে, তাদের গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক, সাংবিধানিক অধিকারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করবে, যারা তাদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, জবাবদিহি থাকবে দৈনন্দিন ভিত্তিতে, এটার অপেক্ষায় জনগণ আছে। আর কোনো প্রক্রিয়ায় শেখ হাসিনার মতো নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পিছিয়ে দেওয়া, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা, আইনের শাসনকে বাধাগ্রস্ত করা, বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক, সাংবিধানিক অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করা; যারা নামবে এটাতে তাদের এটার জন্য দায় নিতে হবে। এই দায় তাদের নিতেই হবে। সুতরাং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা সঠিক সিদ্ধান্তে ফিরে আসবে, বাংলাদেশের মানুষের জন্য মঙ্গল, দেশের জন্য মঙ্গল, তাদের নিজেদের জন্যও মঙ্গল।

প্রশ্নোত্তর পর্ব : নগরের পাশাপাশি রাউজান ও রাঙ্গুনিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে জড়ানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, যারা নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে, এসব অবশ্য তাদের যুক্তির একটা অংশ। যারা বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না, এটা তাদের প্রোপাগান্ডারও একটি অংশ। তবে আমি বলতে চাই, বিএনপি একমাত্র দল, যারা বিচারহীনতায় বিশ্বাস করে না। যে কারণে পাঁচ আগস্টের পরে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সেসব ঘটনায় বিভিন্নভাবে যতজন বিএনপি নেতাকর্মীর নাম এসেছে, পত্রপত্রিকার মাধ্যমে আসুক কিংবা কারও অভিযোগের মাধ্যমে আসুক, এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার বিএনপির নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাংলাদেশের আর কোনো দল এই উদাহরণ তৈরি করতে পারেনি। অভিযোগে যেভাবেই আসুক কোনো ধরনের ইনভেস্টিগেশন ছাড়াই তাকে দল থেকে বহিষ্কর করেছি।

খসরু বলেন, আমি নিজে দলে এই প্রশ্ন তুলেছি, তদন্ত ছাড়াই যে বিএনপি নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করা হচ্ছে, আমরা দেখছি যে অনেক নেতাকর্মীই এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত নেই। একটা মিথ্যা অভিযোগের শিকার তারা। কিন্তু বিএনপি সেটার জন্য অপেক্ষা করছে না, আগে বহিষ্কার করছে এবং তদন্ত করছে পরে। তদন্তে যদি দেখা যায় সে নির্দোষ তাহলে দলে ফিরে আসতে পারছে। সুতরাং একটি দল সরকারের বাইরে থেকে এটা করছে, কিন্তু আমরা যদি সরকারে থাকতাম, এদের অনেকে জেলে থাকত। সরকারকে বলব, বিএনপি বলে কথা নয়, যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করবে, তাদের গ্রেপ্তার করুন, বিচার করুন, ইনক্লুডিং বিএনপি। আজ বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে আমরা এ কাজটাই করতাম। বিএনপি বিচারহীনতা কোনোদিন সহ্য করতে পারে না। আরও অনেক দলের নেতাকর্মী কিন্তু এ ধরনের কাজে জড়িত আছে। তাদের বিরুদ্ধে কিন্তু দলীয়ভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিএনপি একমাত্র দল, দুই হাজারের মতো নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে। সুতরাং ক্ষমতায় থাকুক বা ক্ষমতার বাইরে থাকুক বিএনপি এ ব্যাপারে অনড় থাকবে।

বিএনপির বিরুদ্ধে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার প্রক্রিয়ায় থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যাদের রাজনৈতিক কোনো মতাদর্শ নেই, যাদের রাজনৈতিকভাবে দৈন্য হয়ে গেছে, তারা এ ধরনের কথা বাজারে এনে বিএনপির জনপ্রিয়তাকে ক্ষতি করতে চাচ্ছে। যে দল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শেখ হাসিনার হাতে, যে দল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফ্যাসিস্টের হাতে, যে দলের ৬০৭০ লক্ষ নেতাকর্মী মিথ্যা মামলার সম্মুখীন, যে দলের হাজারহাজার নেতাকর্মী গুমখুনের শিকার হয়েছে, যে দলের নেতাকর্মীরা পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছে, যে দলের নেতাকর্মীরা জেলে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করেছে, বেগম জিয়াসহ, আমিসহ আমাদের মতো অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্যাসিস্টের হাতে, কেউ যদি বলে আমরা তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছি, তাহলে তাদের কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই, তারা নতুন নতুন ধারণা, নতুন নতুন বয়ান বাজারে ছেড়ে চেষ্টা করছে বিএনপির জনপ্রিয়তা ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য।

খসরু বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, বিএনপির মতো ক্ষতিগ্রস্ত, আমার মতো ক্ষতিগ্রস্ত তাদের মধ্যে কয়জন আছে? আমি যতবার জেলে গেছি, আমার ওপর যত নির্যাতন হয়েছে, আমার পরিবারের ওপর যত নির্যাতন হয়েছে, যারা বলছে, তাদের কি এর এক শতাংশ হয়েছে? তারেক রহমান সাহেব পরিষ্কারভাবে বলেছেন, আমরা কোনো প্রতিশোধের ও প্রতিহিংসার রাজনীতি বাংলাদেশে করব না, কিন্তু বিচার করতে হবে। শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীদের, যারা দেশের মানুষের ওপর নির্যাতন, গুমখুন, মিথ্যা মামলায় হয়রানি করেছে, যারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে, প্রত্যেকের বিচার করতে হবে। সেটা এখন হচ্ছে কিনা আমার সন্দেহ আছে। তবে বিএনপি এলে সেই কাজটা আমরা পরিপূর্ণভাবে করব।

পুলিশ ও প্রশাসনের বিদ্যমান কাঠামো বজায় রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, একটা দেশের প্রশাসন পুলিশ আর সরকারি কর্মকর্তা দিয়ে চলে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার যখন আসে, এই ফাউন্ডেশনের ওপর ভিত্তি করে পুলিশ প্রশাসন তার দায়িত্ব পালন করে। এখন বাংলাদেশে যেসব সমস্যা দেখতে পাচ্ছি, যেহেতু বাংলাদেশে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই, এজন্য কোনো ফাউন্ডেশনও নেই। পলিটিক্যাল মাইন্ড নেই, পলিটিক্যাল মোবিলাইজেশন নেই, নির্বাচনের বেলায়ও তাই।

খসরু বলেন, নির্বাচনের মূল শক্তি হচ্ছে জনগণ। পুলিশ ও প্রশাসন সহায়ক ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের মানুষ একটি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, নতুন প্রজন্ম নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। সকলে আমরা মিলে সেই নির্বাচন যে সফল হবে এই সম্বন্ধে কারো কোনো সন্দেহ নেই। পুলিশ কিংবা প্রশাসন হচ্ছে সহায়ক শক্তি, এটা মাথায় রাখতে হবে। পুলিশ একা কোনোদিন কোনো নির্বাচন সফল করতে পারে না, প্রশাসন পারে না। দেশের মানুষসহ সবাই মিলে নির্বাচন সফল করতে হয়। এজন্য বাংলাদেশের মানুষ প্রস্তুত আছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, যারা আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসনের কথা বলে তারা কী করছে? কাজটা তো তাদের। আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসনের কথা সকালবিকেল যারা বলছে তারা তো সরকারের অংশ, তাদের কাজটা কি? আসল কাজ না করে নির্বাচন বন্ধ করার জন্য রাজনৈতিক যে বয়ান দেয় সেটা বন্ধ করলে ভালো হয়।

এরশাদ উল্লাহ বলেন, রাজনীতিকে একটি সুন্দর জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এবং গণতন্ত্রকে সম্প্রসারিত করার জন্য সাংবাদিকদের একটি বিরাট ভূমিকা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআরেকটি ১/১১ হতে দেওয়া হবে না : নাহিদ
পরবর্তী নিবন্ধঅনলাইন পোর্টালের নিবন্ধন পর্যালোচনাসহ ৭ সুপারিশ