একটি রায় চোখের কোণে জল

| বৃহস্পতিবার , ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

বহু প্রত্যাশিত রায় হওয়ার পর আদালতের বারান্দায় আইনজীবীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে দুই আঙুল তুলে বিজয়ের ‘ভি’ দেখালেন বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ; কিন্তু চশমার ফাঁক দিয়ে তখনও তার চোখ দুটি ছলছল, কপাল আর নাকের দুপাশে কান্নাচাপা কষ্টের ভাঁজ। একটু পরেই দণ্ডিত আসামিদের কারাগারে নিয়ে যেতে তোলা হল প্রিজন ভ্যানে। আবরারের কাছেপিঠেই তাদের বয়স। যাবজ্জীবনের আসামি ইসতিয়াক আহমেদ মুন্নার ছোট্ট বোনটি দুহাত বাড়িয়ে কাঁদছিল বাইরে; ভাইকে সে এভাবে জেলে নিয়ে যেতে দিতে চায় না। ভাই যে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে, সেটা বোঝার বয়স বোনের হয়নি। খবর বিডিনিউজের।
আবরার ছিলেন বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী, থাকতেন শেরেবাংলা হলে। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে কয়েক ঘণ্টা ধরে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। যে ২৫ জন আবরারকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তারা সবাই বুয়েটেরই ছাত্র এবং ছাত্রলীগের কর্মী।
আবরারের হত্যাকারীদের দণ্ড যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়, সরকারের কাছে সেই দাবি তুলে ধরেন বরকত উল্লাহ। আবরারের মামা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, নিম্ন আদালতের এই রায় উচ্চ আদালতেও বহাল থাকবে বলে তাদের বিশ্বাস।
রায় ঘোষণার সময় আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন ইসতিয়াক আহমেদ মুন্নার মা শেলী আহমেদ, অমিত সাহার মা দেবী রানী সাহাসহ আসামিদের পরিবারের সদস্যরা। সাজা ঘোষণার পর তারা মুষড়ে পড়েন। কেউ একেবারে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন, কেউ করছিলেন বিলাপ। যাবজ্জীবনের আসামি অমিতের মা হাউমাউ করে কেঁদে উঠে বলেন, এ কেমন রায়। আমার ছেলে নির্দোষ, ঘটনার দুই দিন আগে অমিত পূজার জন্য বাড়িতে ছিল। এ কেমন বিচার। মুন্নার মা কোনো কথাই বলতে পারছিলেন না। রায় শুনে সঙ্গে আসা দুই মেয়েকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন শুধু।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসে রাতে যা ঘটেছিল
পরবর্তী নিবন্ধআসামি শ্যালককে পুলিশে দিলেন ভগ্নিপতি