একটি মৃত্যু, ভেঙে গেল একটি পরিবারের স্বপ্ন

বাড়ি ফেরার তাড়া ছিল হাদিসুরের

| শুক্রবার , ৪ মার্চ, ২০২২ at ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ

দেশে ফিরলেই বাড়ির কাজে হাত দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, স্বপ্ন ছিল পরিবারের জন্য আরও অনেক কিছু করার; সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন হাদিসুর রহমান। বুধবারও এসব নিয়ে কথা হচ্ছিল মায়ের সঙ্গে, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে। কিন্তু বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান এখন ফিরবেন কফিনবন্দি হয়ে। খবর বিডিনিউজের।
ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে ইউক্রেনে গিয়ে যুদ্ধের মধ্যে আটকা পড়ে বাংলার সমৃদ্ধি। বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে অলিভিয়া বন্দরে নোঙ্গর করে থাকা জাহাজটি রকেট হামলার শিকার হয়। ক্রুদের চেষ্টায় আগুন নেভানো গেলেও ব্রিজে থাকা হাদিসুরের মৃত্যু হয়।
তার মৃত্যুর খবর ওলোটপালোট করে দিয়েছে পরিবারের সব পরিকল্পনা। বরগুনার বেতাগীর হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্বজন আর প্রতিবেশীরা ভিড় করছেন ওই বাড়িতে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে বাবা আবদুর রাজ্জাক মাস্টার বাকরুদ্ধ। মা আমেনা বেগম মূর্ছা যাচ্ছেন বার বার।
অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসা শিক্ষক রাজ্জাকের চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে হাদিসুর ছিলেন মেজ। জাহাজের চাকরিতে বছরের একটি বড় সময় থাকতে হয় বাইরে। সবশেষ বাড়ি এসেছিলেন মাস ছয়েক আগে। তবে পরিবারের সঙ্গে কথা হত নিয়মিত।
ছোট ভাই গোলাম রহমান তারেক জানান, বুধবারও ফোনে ইউক্রেনে বোমা, গুলির শব্দ ও যুদ্ধের অবস্থা নিয়ে কথা হচ্ছিল। ভীতিকর পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন হাদিসুর। বাড়ি ফেরার তাড়া ছিল তার কথায়। তিনি বলেন, ‘ফোনে ভাই বলেছিল, আমাদের আর ভাঙ্গা ঘরে থাকতে হবে না। বাড়িতে এসেই যেভাবে হোক ঘরের কাজ ধরবে।’
বেতাগী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান জানান, এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হয়েছিলেন হাদিসুর। কোর্স শেষ করে তিনি ২০১৮ সালে এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে ওঠেন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাদিসুরের জন্য রাশিয়ার শোক প্রকাশ
পরবর্তী নিবন্ধনাবিকদের মধ্যে রয়েছেন সন্দ্বীপ ও সীতাকুণ্ডের ৩ জন