চাঁদা দাবি, অপহরণ, জোরপূর্বক চেক গ্রহণ ও হুমকি প্রদানের অভিযোগে করা একটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সেই সাথে বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা পৃথক দুটি মামলা থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এ সময় তিনি আদালতে হাজির ছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আবদুর রহমান এই আদেশ দেন। ২০২১ সালের ২৯ মার্চ নগরীর চকবাজার থানায় লুসি খান নামে এক চিকিৎসক চাঁদা দাবি, অপহরণ, জোরপূর্বক চেক গ্রহণ ও হুমকি প্রদানের অভিযোগে দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ডা. শাহাদাত হোসেন, মোজাফ্ফর আহমদ ও তার স্ত্রী ফাতেমা জোহরাকে আসামি করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১ সালের ২০ মার্চ বাদীর এনজিও প্রতিষ্ঠান জীবন চিত্র ফাউন্ডেশনে এসে প্রতিষ্ঠানের সচিব মহিউদ্দিন আহমদকে কৌশলে ডেকে নিয়ে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণ বাবদ এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। এর আগে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জন্য বাদীর কাছে টাকা চান শাহাদাত। টাকা না দেওয়ায় বাদীর কাছ থেকে চারটি খালি চেকও নেওয়া হয়।
আদালত সূত্র জানায়, পরবর্তীতে এ মামলায় চার্জশিট দাখিল হলে গতকাল চার্জ গঠনের জন্য দিন ধার্য হয়। এরই ধারাবাহিকতায় চার্জ গঠন বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে আসামীপক্ষে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত শাহাদাত হোসেন ও মোজাফ্ফর আহমদকে অব্যাহিত দিয়ে ফাতেমা জোহরার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
আদালত সূত্র আরো জানায়, নগর বিএনপির গত কমিটির মহিলা বিষয়ক সহসম্পাদক লুসি খান মামলা দায়ের করার পর ডা. শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। পরে তিনি উক্ত মামলা থেকে জামিন পেয়েছিলেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, চাঁদাবাজির মামলায় ডা. শাহাদাত হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের জন্য দিন ধার্য ছিল। শুনানির সময় আসামিপক্ষ অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত মামলার তিন আসামির মধ্যে শাহাদাত হোসেন ও মোজাফ্ফর আহমেদকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। মামলার অপর আসামি তথা ফাতেমা জোহরার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
তিনি বলেন, এছাড়া বিস্ফোরক আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে কোতোয়ালী থানায় হওয়া দুটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে উক্ত দুটি মামলা থেকে তিনি খালাস পান।
আদালত প্রাঙ্গণে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার মাধ্যমে আমাকে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমত, আদালতের ন্যায়বিচার এবং আপনাদের দোয়া–ভালোবাসার কারণে আমি আজ অব্যাহতি পেলাম। সত্যকে কখনোই চাপা দেওয়া যায় না। জনগণের কল্যাণ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আমি আজীবন অবিচল থাকব। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বিএনপি আবারো জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে যাবে।