দেশের মানুষ মদিনার ইসলামে বিশ্বাসী, মওদুদীর ইসলামে নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। জামায়াতে ইসলামীর আদর্শের সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের ৯০ থেকে ৯২ ভাগ মানুষ মদিনার ইসলামের অনুসারী। আমরা কেউ মওদুদীর ইসলামের অনুসারী নই। গতকাল শনিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে ‘আজমতে সাহাবা’ শীর্ষক ইসলামী সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
নির্বাচনকালীন রাজনীতির স্বার্থে একটি রাজনৈতিক দল ইসলামকে ব্যবহার করে জাতিকে বিভক্ত করতে চায় মন্তব্য করে সালাহউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে সবসময় বিশেষ করে নির্বাচনের আগে ইসলামকে রাজনীতিতে ব্যবহার করা এবং বিভিন্ন তরিকায় ব্যবহার করে ফায়দা হাসিল করার বিষয়টি লক্ষ্য করি। ইদানিং সেইটা আরও বেশি লক্ষ্য করছি। একটি দল নির্বাচনের স্বার্থে, রাজনীতির স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করে জাতির মধ্যে বিভক্তি নিয়ে আসতে চায়। বিশেষ করে ইসলামের ক্ষতি করতে চায়। এজন্য বাংলাদেশে ‘আজমতে সাহাবা’ সম্মেলন আরও বেশি বেশি হওয়া দরকার। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) যে ইসলাম প্রবর্তন করে গেছেন, সাহাবায়ে কেরাম যে ইসলামের অনুশীলন করে গেছেন, আমরা সেই ইসলামের অনুসারী। এখানে আমরা কেউ মওদুদী ইসলামের অনুসারী নই। সুতরাং যারা ফিরকা, ফেতনা তৈরি করে বাংলাদেশের মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়, তাদের কাছ থেকে সাবধান হতে হবে। এবং বাংলাদেশের মুসলমানকে সহি ও দ্বীনি ইলম অর্জন এবং অনুশীলনের রাস্তা উন্মুক্ত করে দিতে হবে।
ইসলামকে ব্যবহার করে যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায় তাদের কাছ থেকে দূরে থাকারও পরামর্শ দেন বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, এখানে কোনো রাজনীতি নেই। আমি পহেলায় বলেছি, আমাদের কাছে পহেলা দ্বীন, বাদ মে (পরে) দুনিয়া। এজন্য আমাদের চিন্তা করতে হবে– যারা রাজনীতির নামে বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দিতে থাকে, বিভিন্ন আদর্শের কারণে, সেটা স্বাগতম। ইসলামকে যেন আমরা সেই জায়গায় নিয়ে না যাই, যেখানে রাজনৈতিক কারণে আমাদের দ্বীনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার, শেখ হাসিনা সরকার ইসলাম বিদ্বেষী সরকার ছিল। তারা মুসলিম বিদ্বেষী সরকার ছিল। আওয়ামী লীগের রাজনীতি এদেশের মানুষ দেখেছে। এটা অপরাজনীতি ও ইসলাম বিদ্বেষী রাজনীতি ছিল। রাজনৈতিক স্বার্থে তারা আলেম ও ইসলাম বিদ্বেষী রাজনীতি করেছেন। আল্লাহর হুকুমে তারা কীভাবে বিদায় নিয়েছে, সবাই সে ইতিহাসের সাক্ষী।
ভালো আদর্শের মধ্য দিয়ে যাতে ফ্যাসিবাদী ও অপরাজনীতির সংস্কৃতি বিলুপ্ত হয়, সেজন্য সঠিক পথে রাজনীতি ও আদর্শিক রাজনীতির চর্চার আহ্বান জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতা।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে হেফাজতে ইসলামের আমীর শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। তবে সংগঠনটির মহাসচিব সাজিদুর রহমান বক্তব্য দেন। হেফাজতে ইসলামের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আমীর মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি, জমিয়তে ইলামায়ে ইসলাম ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
