একটি ডাব ১৫০-১৮০ টাকা!

ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় ডাবে চাপ কৃত্রিম সংকটের অভিযোগ, বাজার মনিটরিং দাবি

জাহেদুল কবির | শনিবার , ২৬ আগস্ট, ২০২৩ at ৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ

দুই মাসের ব্যবধানে দ্বিগুণ বেড়েছে ডাবের দাম। বাজারে ডাবের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকার পরেও শুধুমাত্র বাজার চাহিদাকে পুঁজি করে ডাবের দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারাএমন অভিযোগ ভোক্তাদের। কারণ বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার কারণে চিকিৎসকরা তরল খাবার বিশেষ করে ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডাবের চাহিদার তুলনায় যোগান কম, তাই দাম বাড়তি।

গতকাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের প্রধান ফটক এলাকায় ভ্রাম্যমাণ ভ্যান গাড়িতে ডাব বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া আশপাশের কিছু ফলের দোকানেও ডাব বিক্রি হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছোট আকারের প্রতিটি ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, মাঝারি ও বড় আকারের ডাব বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়।

আলী হোসেন নামের একজন বিক্রেতা জানান, গত দুই মাস আগেও ডাবের এ রকম চাহিদা ছিল না। আগে প্রতিদিন একশ পিস ডাবও বিক্রি হতো না। এখন প্রতিদিন একশ পিসের ওপরে বিক্রি হচ্ছে। আমরা পাইকারদের কাছ থেকে সাইজ অনুযায়ী ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় ডাব কিনছি। গাড়ি ভাড়াসহ আনুষাঙ্গিক খরচ মিলিয়ে প্রতিটি ডাবে ১০১৫ টাকা লাভ হয়। সিরাজুল ইসলামের নামের অপর এক ডাব বিক্রেতা বলেন, দুইদিন আগে বড় আকারের ডাব দুইশত টাকায়ও বিক্রি হয়েছে। আজ (গতকাল) দাম কিছুটা কমেছে। আসলে আমরা পাইকারি দোকান থেকে ডাব কিনে অল্প লাভে বিক্রি করি। পাইকারিতে দাম কমলে আমরাও কমিয়ে বিক্রি করি।

সামিউল আলম নামের একজন ক্রেতা বলেন, আমার বড় ভাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তি আছে। চিকিৎসকরা যেহেতু তরল খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন, তাই ডাব কিনতে এসেছি। কিন্তু ডাব বিক্রেতাদের দাম শুনে আমি অবাক। ছোট আকারের ডাবের দাম হাঁকছে ১৫০ টাকা। আমার জীবনে ডাবের এত দাম কখনো দেখিনি। আমি নিশ্চিত, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ডাবের দাম বাড়াচ্ছেন।

তৌহিদুল ইসলাম নামের অপর এক ক্রেতা জানান, গত দুই সপ্তাহ আগে যে ডাব আমি ৮০ টাকায় কিনেছি, সেটি বিক্রেতারা একদাম ১৫০ টাকায়ও দিচ্ছে না। এটি সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক। এদিকে নগরীর ফিরিঙ্গী বাজার এলাকার পাইকারি ডাবের আড়তগুলোতে ডাবের পর্যাপ্ত মজুদ লক্ষ্য করা গেছে। আমির হোসেন নামে একজন পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, ডাবের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। আমরা যে ডাব গড়ে ১০০ টাকায় কিনতাম, সেটি এখন কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকায়। এছাড়া এর সাথে পরিবহন খরচও যুক্ত হচ্ছে। এসব ডাব বেশিরভাগই আসে কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলা থেকে। এছাড়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও অল্প পরিমাণে ডাব আসে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে এমন কোনো পণ্য নেই যে দাম বাড়েনি। আমরা বারবার বলে আসছি ব্যবসায়ীদের অজুহাতের শেষ নেই। যে পণ্যের চাহিদা বাড়ে, তখন সেটির কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। এখন এর প্রভাব পড়েছে ডাবের বাজার। প্রশাসন যদি দ্রুত বাজার নিয়ন্ত্রণ না করে, তবে দাম আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
পরবর্তী নিবন্ধজঙ্গি দমনে মাস্টারপ্ল্যান