প্রকৌশলী আবুল খায়ের একজন পরোপকারী মানুষের নাম। বুয়েটের কৃতী ও মেধাবী ছাত্র ছিলেন তিনি। কর্ম জীবনে ছিলেন একজন সফল ও দক্ষ কর্মকর্তা। আশির দশকে এই অনন্য প্রতিভাধর মানুষটি দেশের বৃহত্তম তৈল কোম্পানি বার্মা ইস্টার্ন তথা পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগদান করেন। মেধা ও দক্ষতাগুণে তিনি আসীন হয়েছিলেন পদ্মা অয়েল কোম্পানির সর্বোচ্চ পদে। আমার পেশাগত জীবনে ২ জন প্রচণ্ড ব্যক্তিত্ববান প্রশাসককে অত্যন্ত কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন প্রকৌশলী এম আনোয়ারুল হক এবং অপরজন প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল খায়ের। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় উভয়ে ছিলেন সমান পারদর্শী। কাজকর্মে ভুল-ভ্রান্তিতে তাঁদের বকাঝকার ভয়ে অধঃস্তন কর্মকর্তারা সব সময় তটস্থ থাকতে দেখা যেত।
চাকুরি জীবনের অধিকাংশ সময়ই আমি খায়ের সাহেবের সান্নিধ্যে ছিলাম। আমি দেখেছি, বাহিরে তিনি যতটা কঠোর ছিলেন অন্তরটা ছিল ততই কোমল। পরোপকার করতে তিনি কোন সময় পিছ পা হতেন না। ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকাকালীন তিনি কোম্পানিতে দীর্ঘদিন ক্যাজুয়াল শ্রমিক-কর্মচারী হিসেব মানবেতর জীবনযাপন কারী দেড় শতাধিক আদম সন্তানকে চাকুরিতে স্থায়ী করে তাদের ও তাদের পরিবার- পরিজনের মুখে হাসি ফুটিয়েছিলেন। শত বাধা বিপত্তির মুখেও দূর্দান্ত সাহস, অনমনীয় দৃঢ়তা ও ঝুঁকি নিয়ে এই অসাধারণ মানবিক কাজের জন্য পদ্মা অয়েল কোম্পানির ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন প্রকৌশলী মরহুম মোহাম্মদ আবুল খায়ের। অতীব দুঃখের বিষয়, এই পরোপকারী মানুষটি গত ১০ এপ্রিল দুনিয়ার মায়া ছিন্ন করে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আল্লাহ মরহুমকে জান্নাত বাসী করুন।