একই পণ্য বারবার নিলামে দামেও পার্থক্য

আগ্রহ হারাচ্ছেন বিডাররা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৩ আগস্ট, ২০২২ at ৫:১০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনার ইয়ার্ড খালি করার জন্য মাসে একাধিক নিলামের আয়োজন করছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নিলামে তোলা পণ্যের সংরক্ষিত মূল্যের সাথে বর্তমান বাজার দরের বিস্তর ফারাক রয়েছে বলে অভিযোগ নিলামে অংশগ্রহণকারীদের (বিডার)। এছাড়া একই পণ্য বারবার নিলামে তোলা এবং পণ্য অনুমোদন পাওয়ার পর দেখা যাচ্ছে আমদানিকারক উচ্চ আদালতে রিট করে দেন। এক্ষেত্রেও নিলাম কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
একাধিক বিডার বলেছেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেশিরভাগ সময় নিলামে পণ্য তোলার সময় কোনো মামলা আছে কিনা খতিয়ে দেখে না। কিন্তু পণ্য অনুমোদন পেয়ে খালাস পর্যায়ে দেখা যায়, আমদানিকারকের মামলা রয়েছে। তখন মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পণ্য খালাস প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। এতে নিলামে আগ্রহ হারাচ্ছেন বিডাররা।
নিলাম শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, একসময় নিলামের আগে পণ্যের সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ হতো না। কিন্তু দুই বছর ধরে প্রতিটি পণ্যের সংরক্ষিত মূল্য নির্ধারণ করে তারপর ক্যাটালগে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়া সর্বোচ্চ দরদাতাদের অনুকূলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই বিক্রির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব চৌধুরী আজাদীকে বলেন, কাস্টমসের সাম্প্রতিক সময়ে নিলামগুলোতে দেখা যাচ্ছে, ক্যাটালগে নতুন কোনো পণ্য অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না। এতে বিডাররা নিলামে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ২০১৪ সালে যে পণ্য নিলামে তুলে বিক্রি হয়নি, সেটিও আবার নিলামে তুলেছে। এক্ষেত্রে সংরক্ষিত দাম নির্ধারণ করা হচ্ছে আমদানিকারকের আমদানি মূল্যটাকে প্রাধান্য দিয়ে। অথচ একটি নির্দিষ্ট সময় পণ্য পড়ে থাকলে তার কিছু অবচয় থাকে। কিন্তু কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি বিবেচনায় আনেন না। দেখা যাচ্ছে, যে পণ্যের বর্তমান বাজারমূল্য ১০০ টাকা, নিলামের ক্যাটালগে সেটার সংরক্ষিত মূল্য ধরা হচ্ছে ১৫০ টাকা। অন্যদিকে কোনো একটি পণ্য সর্বোচ্চ দরদাতার অনুকূলে বিক্রয় অনুমোদন দেয়ার পর সেই পণ্যে আগে থেকেই আমদানিকারকের মামলা রয়েছে। এক্ষেত্রে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেই পণ্য খালাসের সুযোগ থাকে না। এছাড়া বিডারদের পে-অর্ডারও আটকে যায়।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখার উপ-কমিশনার ওমর মবিন আজাদীকে বলেন, নিলামের স্থায়ী আদেশ মেনে আমরা নিলাম কার্যক্রম সম্পন্ন করছি। নিলামে সবসময় নতুন নতুন পণ্য থাকবে, এটি কখনো হয় না। নিলামে কিছু জটিলতা ছিল। এর মধ্যে অনেকগুলো নিরসন হয়েছে। তবে একটি সমস্যা হচ্ছে, আমদানিকারকরা দীর্ঘ সময় পণ্য আমদানি করে বন্দরের ইয়ার্ডে ফেলে রাখে। কিন্তু যে মাত্র নিলামে তোলা হয়, তখন আমদানিকারক মামলা করে দেন। তখন বিক্রয় অনুমোদন দেয়ার পরেও বিডারদের পণ্য দিতে পারি না। এক্ষেত্রে আমরা বিডারকে তার জমা দেয়া পে-অর্ডার ফেরত দিয়ে দিই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
পরবর্তী নিবন্ধরিজভীর বক্তব্য আদালত অবমাননা ও ফৌজদারি অপরাধ : তথ্যমন্ত্রী