সাফ অনূর্ধ্ব–২০ ফুটবলে সপ্তাহ তিনেক আগে বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়ন হয়ে এসেছিল। এরপর ভিয়েতনামে এএফসি অনূর্ধ্ব–২০ টুর্নামেন্টের বাছাইয়ে যায় তারা। সেখানে গতকাল বাংলাদেশ দেখলো মুদ্রার অন্যপিঠও। গতকাল ভিয়েতনামে এএফসি অনূর্ধ্ব–২০ টুর্নামেন্টের বাছাইয়ে সিরিয়ার বিপক্ষে ৪–০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। সিনিয়র ফিফা র্যাংকিংয়ে সিরিয়ার অবস্থান ৯২ আর বাংলাদেশের ১৮৬। দুই দেশের সিনিয়রদের র্যাংকিংয়ের পার্থক্য দুই দেশের ফুটবলের তারতম্য ও বাস্তবতা। বিশ বছর বয়স ভিত্তিক পর্যায়েও সিরিয়া অনেক এগিয়ে। সেটা ভিয়েতনামের মাঠে আবার প্রমাণিত হয়েছে।
১২ মিনিটের মধ্যে দুই গোল হজম করে দিশেহারা হয়ে পড়েন নোভা–মাহিনরা। ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ। সিরিয়ার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হেরে এএফসি অনূর্ধ্ব–২০ এশিয়ান কাপের বাছাই শুরু করল মারুফুল হকের দল। ভিয়েতনামের ল্যাচ ট্রে স্টেডিয়ামে শনিবার ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচ সিরিয়ার বিপক্ষে ৪–০ গোলে হারে বাংলাদেশ। দুই অর্ধে দুটি করে গোল করে সিরিয়া। বাছাইয়ে সিরিয়াকে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ বলে উল্লেখ করেছিলেন মারুফুল হক; মাঠের লড়াইয়েও কোচের কথার প্রতিফলন দেখা গেল পুরোটা সময়। পঞ্চম মিনিটের গোলে সিরিয়ার ছড়ি ঘোরানোর শুরু। ডান দিক থেকে সতীর্থের আড়াআড়ি ক্রসে দূরের পোস্ট থেকে নিখুঁত প্লেসিং শটে জাল খুঁজে নেন ইসা কাওয়া। দ্বাদশ মিনিটে একইভাবে ডান দিক থেকে আসা ক্রসে হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেনাজ ইউসা। দ্রুত দুই গোল খেয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে তেমন উল্লেখ করার মতো কোনো আক্রমণই শাণাতে পারেনি বাংলাদেশ। ২২তম মিনিটে বঙে ভালো ক্রস বাড়িয়েছিলেন ইফতিয়ার হোসেন, কিন্তু মাথা ছোঁয়াতে পারেননি কেউ। ৩৫তম মিনিটে বঙের বাইরে থেকে ইউসার নিচু জোরালো শট ফিরিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি গোলরক্ষক ইসমাইল মাহিন। একটু পর আনাস দাহানের শট এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধেও সাদামাটা ফুটবলের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশ। ৭৩তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নেয় সিরিয়া। আব্দুল রহমানের শট গোলরক্ষক ফিস্ট করে ফেরালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত হয়নি; ফিরতি শটে লক্ষ্যভেদ করেন ওয়েসাম ডুখান। শেষ দিকে ফ্রি কিকে ব্যবধান আরও বাড়ান আনাস। এই গোলে অবশ্য দায় আছে গোলরক্ষকের। কাছের পোস্টে নেওয়া সিরিয়ার এই ফরোয়ার্ডের ফ্রি কিকে বল মাহিনের হাত হয়েই জালে লুটোপুটি খায়। কদিন আগে প্রথমবারের মতো সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে মারুফুল সাবধানী কণ্ঠে বলেছিলেন, সাফ আর এএফসির টুর্নামেন্টের প্রতিদ্বন্দ্বিতা এক নয়। সিরিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই তার টের পেল তপু–মিরাজুলরা।
এএফসি অনূর্ধ্ব–২০ বাছাইয়ে দশটি গ্রুপ। দশ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও সেরা পাচ রানার্স আপ চূড়ান্ত পর্বে খেলবে। বড় ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশের পরবর্তী রাউন্ডে খেলা শঙ্কার মধ্যেই পড়ল। সোমবার গুয়ামের বিপক্ষে পরবর্তী ম্যাচ বাংলাদেশের। গুয়াম গতকাল প্রথম ম্যাচে ভূটানের বিপক্ষে ১–১ গোলে ড্র করেছে। এদিকে আজ সাফ অ–১৭ টুর্নামেন্টে ভূটানে ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের।
সেই ম্যাচে মালদ্বীপকে হারাতে হবে বাংলাদেশকে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠতে হলে। আজ মালদ্বীপের বিপক্ষে হারলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় হবে বাংলাদেশের। ড্র করলে আবার গোল ব্যবধানের হিসাব–নিকাশের অপেক্ষায় থাকতে হবে মালদ্বীপ–ভারত ম্যাচ পর্যন্ত।