এই ঋণ শোধ হবার নয়

সরোজ আহমেদ | রবিবার , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ২:২৯ অপরাহ্ণ

ঐতিহ্যের চট্টগ্রাম, চট্টগ্রামের ঐতিহ্য ‘দৈনিক আজাদী’। ছোটবেলা থেকে যে পত্রিকাটি দেখে এবং পড়ে বড় হয়েছি। পড়তে পড়তে এক সময় নিজেরও লেখার ইচ্ছে জাগল। সুযোগ পেলেই কিছু না কিছু লেখার চেষ্টা করতাম। আর স্বপ্ন বুনতাম, আমার লেখাও একদিন না একদিন আজাদীতে ছাপা অক্ষরে বেরুবেই। ১৯৯১ সালে ঘটে যাওয়া প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সেসময় একটা কবিতা লিখে পাঠিয়েছিলাম আজাদীতে। এটা আজাদীতে পাঠানো আমার প্রথম কোনো লেখা। কিন্তু লেখাটি ছাপা হয়নি। ভীষণ মন খারাপ হয়েছিল তখন। আর লেখা পাঠাইনি অনেকদিন। এরপর একদিন লোকালয় পাতায় একটা ফিচার লিখে পাঠালাম। লেখাটি প্রকাশিত হলো। পত্রিকার পাতায় নিজের নামে ছাপানো প্রথম লেখাটি দেখে সেদিন যে আনন্দ আর উৎসাহ পেয়েছিলাম তা জীবনে কোনো কিছু সঙ্গে তুলনা হবে না।

এর পর থেকে নিয়মিত লেখা শুরু করলাম লোকালয়ে। একের পর এক লেখা ছাপা হচ্ছে আবার লেখার সম্মানিও পাচ্ছি। তখনও লোকালয় পাতার এডিটর প্রদীপ দেওয়ানজী দা’র সাথে পরিচয় ঘটেনি। একদিন চেরাগির মোড়ে কার মাধ্যমে পরিচয় হলো ঠিক মনে নেই। সেদিন প্রদীপ দা আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘তুমি তো ভালোই লেখো, তোমার লেখা বেশ ইন্টারেস্টিং। নিয়মিত লেখা দিও।’ শুনে আরও উৎসাহবোধ করলাম।

একসময় পুরোপুরি জড়িয়ে গেলাম সাংবাদিকতায়। মাসিক ‘অবিচল’ নামে নিজেই একটা পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করি। পরে এটি সাপ্তাহিক হিসেবে নিয়মিত প্রকাশনায় আসে। পাশাপাশি দৈনিক ইত্তেফাকে জয়েন করি। পরবর্তীতে ডেইলি পিপলস ভিউ পত্রিকায়ও কাজ করেছি। কিন্তু আজাদীতে কাজ করার ইচ্ছেটা প্রবল হয়ে ওঠল। সৃষ্টিকর্তা সেই ইচ্ছেও পূরণ করলেন। ২০১০ সালে আজাদীর সম্পাদক শ্রদ্বেয় এম এ মালেক স্যার আমাকে আজাদী পরিবারে ঠাঁই দিয়ে কাজ করার সুযোগ দিলেন। সেই সুযোগ কাজে লাগানোর শতভাগ চেষ্টা করেছি। তখন যাঁদের আন্তরিকপূর্ণ সহযোগিতা ও পরামর্শে অসংখ্য এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদন করতে পেরেছিলাম। তাঁদের মধ্যে আজাদীর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহেদ মালেক, আজাদীর সহযোগী সম্পাদক কবি রাশেদ রউফ, আজাদীর বিভাগীয় সম্পাদক নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী ও প্রধান প্রতিবেদক হাসান আকবর অন্যতম।

২০১০ সালে আজাদীতে রিপোর্টিংয়ের পাশাপাশি আগামীদের আসরেও নিয়মিত গল্প, রকমারি ফিচার লিখতে শুরু করি। যা এখনো অব্যাহত রেখেছি। তবে সব কথার মূল কথাআমি লেখক এবং সাংবাদিক হয়ে ওঠার পেছনে বড় ভূমিকা আজাদী এবং আজাদী পরিবারের। কখনো এই ঋণ শোধ হবার নয়।

লেখক : সাংবাদিক, সাহিত্যিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধআগামীদের আসরের মিলনমেলায়
পরবর্তী নিবন্ধদৈনিক আজাদী ও আক্ষেপ পূরণের গল্প