এইচ জি ওয়েলস – বিশ্ববিখ্যাত সাহিত্যিক ও মনীষী। বিজ্ঞানকে কল্পনার রঙে রঙিন করে সাহিত্য বিনির্মাণে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি। খ্যাতিমান হয়েছেন কল্পবিজ্ঞান লেখক হিসেবে।
ইংরেজ এই সাহিত্যিকের জন্ম ১৮৬৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডে। পুরো নাম হার্বার্ট জর্জ ওয়েলস। তাঁর ছেলেবেলা কেটেছে দারিদ্র্যে। বাবা ছিলেন জুতোর কারিগর আর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। খানিকটা অনিয়মিতভাবেই তাঁকে সমাপ্ত করতে হয় স্কুল শিক্ষা। পরবর্তীকালে বৃত্তি নিয়ে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সুযোগ পান এবং ১৮৯০ সালে এখান থেকে জীববিদ্যায় স্নাতক হন। এরই ফাঁকে ফাঁকে চলতে থাকে লেখালেখি। দু-চার বছরের ব্যবধানে প্রকাশিত হয় তাঁর তিনটি বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য ইনভিজিবল ম্যান’, ‘টাইম মেশিন’ এবং ‘দ্য ওয়ার অব দ্য ওয়ার্ল্ডস’। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির আরেকজন রূপকার বিখ্যাত ফরাসি লেখক জুল ভের্নের সাথে যৌথভাবে ওয়েলস বিজ্ঞান বিষয়ক কল্পকাহিনির উদ্ভাবন ও প্রসারে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। সমাজ চিন্তাবিদ হিসেবেও ওয়েলসের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক বিশ্বের নানা সমস্যা সমাধানের দিক নির্দেশনা পাওয়া যায় তাঁর লেখায়। এ সংক্রান্ত তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা : ‘অ্যান্টিসিপেশান্স’, ‘আ মডার্ন ইউটোপিয়া’, ‘আউটলাইন অব হিস্ট্রি’ প্রভৃতি। তাঁর কল্পনাপ্রবণ মন ব্যঙ্গ ও হাস্যরসাত্মক কাহিনি রচনায়ও ধাবিত হয়েছে। এ ধরনের উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে : ‘দ্য হিস্ট্রি অব মিস্টার পলি’, ‘লাভ অ্যান্ড মিস্টার লিউইনসাম’ ইত্যাদি। আত্মজীবনী ‘এঙপেরিমেন্ট ইন অটোবায়োগ্রাফি’ গ্রন্থে ব্যক্তি ওয়েলসকে নানাভাবে খুঁজে পাওয়া যায়। লেনিন ও রবীঠাকুরের সাথে ওয়েলস ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করেছিলেন। অসাধারণ কল্পনাপ্রবণ মন, সেই সাথে গভীর সমাজ অনুসন্ধিৎসা ও মানবহিতৈষী দৃষ্টিভঙ্গি – সব মিলিয়ে এইচ. জি. ওয়েলস ছিলেন অনন্য এক প্রতিভা। ১৯৪৬ সালের ১৩ আগস্ট তিনি প্রয়াত হন।